
করইয়া নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী পরিষদ ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির যৌথ উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন এবং অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিদ্যালয়ের হল রুমে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে পাঠদানে যুক্ত থাকা আট অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে সম্মাননা দেওয়া হয়। সম্মাননা প্রাপ্ত শিক্ষকরা হলেন— মৌলানা নুরুল আলম, মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, রনজিত কুমার সুশীল, আহমদুর রহমান, মাহবুবুল হক, বাদল কান্তি দাশ, রঞ্জন কুমার ধর ও তাহেরাতুল কবির (মরণোত্তর)।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট মনির আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রাক্তন ছাত্র ও বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, করইয়া নগর উচ্চ বিদ্যালয় এই অঞ্চলের অসংখ্য মানুষের জীবনের ভিত্তি নির্মাণ করেছে। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জ্ঞান দেওয়ার পাশাপাশি আমাদের মধ্যে শৃঙ্খলা, নৈতিকতা ও দেশপ্রেমের বীজ বপন করেছেন। আজ যাদের সম্মান জানানো হচ্ছে, তারা জাতি গঠনের নীরব কারিগর। তাদের অবদান কখনো ভোলার নয়।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক বাবু সলিল কান্তি নাথের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ মাহফুজুর রহমান। তিনি বলেন, করইয়া নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সঙ্গে আমাদের আবেগ ও শেকড়ের সম্পর্ক জড়িয়ে আছে। এই বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষেই আমরা স্বপ্ন দেখতে শিখেছি, আর শিক্ষকদের হাত ধরেই জীবনের পথচলা শুরু হয়েছে। শিক্ষকরা নিঃস্বার্থভাবে জাতির জন্য কাজ করেন, অথচ অনেক সময় তাঁরা আড়ালেই থেকে যান। আজকের এই সম্মাননা তাদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতার প্রতীক।
তিনি বলেন, ভষ্যতেও বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের কল্যাণে প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী পরিষদ সক্রিয় থাকবে।
অনুষ্ঠানে সম্মাননা প্রাপ্ত অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মৌলানা নুরুল আলম অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, করইয়া নগর উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করা আমার জীবনের গর্বের অধ্যায়। প্রজন্মের পর প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারাটাই ছিল আমাদের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। আজ প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এমন সম্মান পাওয়া সত্যিই আবেগঘন। একজন শিক্ষকের সবচেয়ে বড় সাফল্য হলো তার ছাত্ররা সুনাগরিক হয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়া।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন করইয়া নগর উচ্চ বিদ্যালয় প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী পরিষদের সহ-সভাপতি নুরুল আলম মন্টু, সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক, বিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্র ডা. খোরশেদ আলম, ড. খোরশেদ আলম, নেওয়াজ হোসেন নিষাদ, জামাল হোসেন, মো. আলমগীর ও এনামুল হক। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- করইয়া নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদুল আলম এবং ছদাহা কেফায়েত উল্লাহ কবির আহমদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিন।
সভায় প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী পরিষদের উদ্যোগে প্রয়াত প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক স্যারের স্মরণে ‘মোজাম্মেল হক স্মৃতি স্কলারশিপ’ চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়। পাশাপাশি বিদ্যালয় ভবনে প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী পরিষদের জন্য একটি অফিস কক্ষ বরাদ্দ দেওয়ার ঘোষণাও দেয় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি। অনুষ্ঠান শেষে সম্মানিত শিক্ষকদের হাতে সম্মাননা স্মারক ও উপহারসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী পরিষদের নেতারা বিদ্যালয়ের প্রয়াত ২০০০ সালের ব্যাচের শিক্ষার্থী আবদুর রশিদ মনিরের কবর জিয়ারত করেন এবং তার অসমাপ্ত বাড়ি নির্মাণে পরিবারকে অনুদান দেন।
পূর্বকোণ/ইবনুর