
প্রথম স্ত্রীর কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করার জন্য নিজেই অপহরণের নাটক সাজানো হাটহাজারীর মো. আবু হানিফকে ৪ ঘণ্টার অভিযানে উদ্ধার করেছে টেকনাফ থানা পুলিশ।
আবু হানিফ চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মির্জাপুর ইউনিয়নের চারিয়া গ্রামের মৃত ইউসুফের ছেলে।
পারিবারিক কলহের কারণে দ্বিতীয় বিয়ে করার পর প্রথম স্ত্রীর কাছ থেকে অর্থ আদায়ের উদ্দেশ্যে নিজের অপহরণের নাটক সাজানোর কথা স্বীকার করেছেন তিনি।
উদ্ধারের পর হানিফকে তার সহোদর ভাইয়ের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূর জানান, গতকাল শনিবার রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত সাবরাং ইউনিয়নের কুরাবুইজ্যাপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হানিফকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। হানিফ কিছুদিন আগে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে টেকনাফে আত্মগোপন করেন এবং সব সিম বন্ধ করে নিখোঁজ হওয়ার নাটক সাজান।
জিজ্ঞাসাবাদে হানিফ স্বীকার করেছে, প্রথম স্ত্রীর খাদিজার সাথে তার ৩০ বছরের সংসার। দাম্পত্য জীবনে পারিবারিক কলহ তীব্র হওয়ায় তিনি প্রথম স্ত্রীকে কিছু না জানিয়ে গত ১৮ অক্টোবর টেকনাফের কুরাবুইজ্জা পাড়ার বিধবা সানজিদা বেগমকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। নতুন সংসার টিকিয়ে রাখতে তিনি প্রথম স্ত্রীর কাছ থেকে অর্থ আদায়ের উদ্দেশ্যে অপহরণের নাটক সাজান। পারিবারিক কলহ ও সাংসারিক জীবনে বনিবনা না হওয়ায় ভিকটিম তার প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে এই বিধবা মহিলাকে বিবাহ করেন। মুক্তিপণের টাকা হাতে পেলে দ্বিতীয় স্ত্রী ও ওই ঘরের ২ সন্তানকে নিয়ে সাগর পথে মালয়েশিয়া পাড়ি জমাতে চেয়েছিল হানিফ।
হানিফ নিখোঁজের ঘটনায় তার ভাই হাটহাজারী থানায় জিডি করেন। ওই জিডির রেফারেন্সে টেকনাফ পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ৪ ঘণ্টার অভিযানে আবু হানিফকে তার দ্বিতীয় স্ত্রীর বাবার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে।
মুক্তিপণ আদায়ের নাটককে বিশ্বাসযোগ্য করতে হানিফ তার শ্যালক কাসিমকে দিয়ে সমুদ্রের পাড়ে ঝাউবাগানের ভেতরে গাছের সাথে নিজেকে বেঁধে তার ভিডিও ধারণ করে। ভিকটিমের পরিবারের সেই ভিডিও পাঠিয়ে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছিল। ওই ভিডিওগুলোসহ হানিফের কাছে দুটি মোবাইল ও ৫টি সিম পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পূর্বকোণ/পিআর/এএইচ