চট্টগ্রাম শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

সর্বশেষ:

বোয়ালখালীতে লাউয়ের ফলনে বাজিমাত সাজ্জাদের

বোয়ালখালীতে লাউয়ের ফলনে বাজিমাত সাজ্জাদের

পূজন সেন, বোয়ালখালী

১৭ নভেম্বর, ২০২৫ | ১১:০২ পূর্বাহ্ণ

হেমন্তের কুয়াশা মোড়ানো সকাল। বাতাসে শীতের আবেশ। সাজ্জাদের লাউ ক্ষেতের মাচায় ঝুলছে নানা আকারের শতশত লাউ। মাচার ফাঁক গলে পড়া রোদে ঝলমল করছে লাউগুলো। লাউ পাতায় জমা শিশির দানাগুলো সেই রোদে মুক্তোর মতো জ্বলজ্বল করে। বোয়ালখালী উপজেলার গ্রামজুড়ে এখন চলছে শাক সবজির আবাদ। শিম, বরবটি, মিষ্টি কুমড়ো, তিতকরলা, মরিচ, বেগুন, ঢেঁড়স ও লাউসহ নানা জাতের সবজির চাষ হয় উঠে যাওয়া আমন ধানের জমিতে।

 

তবে বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের খিতাপচরের মো. সাজ্জাদ হোসেন একটু আগেভাগেই করেছেন লাউয়ের চাষ। তাই তার ক্ষেতের মাচাজুড়ে এখন লাউ আর লাউ। সাত সকালে এ লাউ ক্ষেতের পরিচর্যায় নেমে পড়েন তিনি। লাউয়ের মরা পাতা, ঘাস এসব ক্ষেত থেকে পরিষ্কার করে দেন। এছাড়া সপ্তাহের দুই দিন লাউ সংগ্রহ করে হাটে বিক্রি করেন। উপজেলার শেষ প্রান্তের বোয়ালখালী খালের পাশে ‘খিতাপচর দক্ষিণা বিলে সাজ্জাদের লাউ ক্ষেত।

 

রবিবার (১৬ নভেম্বর) তার সাথে কথা হয়। সাজ্জাদ পূর্বকোণকে জানান, আকার ভেদে দাম দিয়ে তিনি হাটে লাউ বিক্রি করেন। ৩০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০ টাকা পর্যন্ত নেন প্রতিটি লাউয়ের মূল্য। এতে লাভ হয় ভালো। পাইকারি বিক্রি করলে হয়তো পরিশ্রম কম হয়, তবে লাউয়ের শত হিসেবে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা পাওয়া যায়। সাজ্জাদ প্রায় ৪০ শতক জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের লাউ চাষ করেছেন এবার। এতে খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। গত এক মাসে লাউ বিক্রি করে ৪০ হাজার টাকা আয় হয়েছে সাজ্জাদের। আরও টানা দুই মাস লাউ বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদী তিনি। এতে ৭০-৮০ হাজার টাকা আয় হবে।

 

লাউ চাষী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কৃষিকাজ করছি। বেশি ফলন ও সবজির ভালো দামের আশায় লাউ চাষ করি। গত আশ্বিনে উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ থেকে লাউয়ের চারা উৎপাদন করি। এরপর মাদায় রোপণ করেছি। মাত্র দুই মাসের মধ্যে লাউয়ের ভালো ফলন পেয়ে খুশি সাজ্জাদ। কম খরচ ও অল্প সময়ে লাউ চাষে লাভের হিসাব দেখে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। লাউ ছাড়াও সাজ্জাদ ধান ও কচু চাষ করেন। বিষমুক্ত শাক-সবজি ফলিয়ে সংসার চলে তার।

 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উচ্চ ফলনশীল জাতের লাউ অতি শীত ব্যতীত সারাবছর চাষ করা যায়। এ জাতের লাউ বীজ বপনের ৪০-৪৫ দিনপর লাউ সংগ্রহের উপযোগী হয়। প্রচলিত জাতের তুলনায় আড়াই থেকে তিনগুণ ফলন বেশি পাওয়া যায়।

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) কৃষিবিদ কল্পনা রহমান বলেন, লাউ এখন সারাবছরই চাষ হয়। বাজারে লাউয়ের চাহিদা রয়েছে। এখন ন্যায্য দামে বিক্রি করতে পারছেন কৃষকরা। প্রতি হেক্টরে ২৫ থেকে ৩০ মেট্রিক টন লাউ উৎপাদন করা যায়।

 

পূর্বকোণ/ইবনুর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট