চট্টগ্রাম শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

সর্বশেষ:

আরেকটি এলএনজি টার্মিনাল হচ্ছে মহেশখালী এলাকায়

আরেকটি এলএনজি টার্মিনাল হচ্ছে মহেশখালী এলাকায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

৮ নভেম্বর, ২০২৫ | ৪:৩৩ অপরাহ্ণ

আমদানি করা গ্যাসের সরবরাহ বাড়াতে নতুন এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কক্সবাজারের মহেশখালীর কুতুবজোন এলাকার কাছে গভীর সমুদ্রে এই ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। নতুন এলএনজি টার্মিনালটি চালু হলে দেশজুড়ে বিদ্যমান গ্যাস সংকট কমে আসবে বলে জানিয়েছেন পেট্রোবাংলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

 

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান- বর্তমানে মহেশখালীতে দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল চালু রয়েছে। তবে সেগুলো দিয়ে দৈনিক ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব নয়। তাই গ্যাসের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে আমদানি বাড়ানোর জন্য নতুন টার্মিনাল নির্মাণের বিকল্প নেই। এ জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

 

আগে নির্মাণ করা সামিট গ্রুপ ও এক্সিলারেট এনার্জির মালিকানাধীন টার্মিনাল দুটি বিওটি (স্থাপন, পরিচালনা ও হস্তান্তর) পদ্ধতিতে বাস্তবায়িত হয়। এতে চুক্তির মেয়াদ শেষে স্থাপনা সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তবে নতুন টার্মিনালটি হবে বিওও (স্থাপন, পরিচালনা ও মালিকানা) ভিত্তিতে। এতে চুক্তির মেয়াদ শেষে স্থাপনা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ফেরত নেবে।

 

এতে রিগ্যাসিফিকেশনে (তরল থেকে গ্যাসে রূপান্তর) আগের তুলনায় খরচ কম হবে। ফলে গ্যাসের দামও কম পড়বে। নতুন টার্মিনালটি জিটুজি পদ্ধতিতে হবে জানিয়ে পেট্রোবাংলার একজন পরিচালক বলেন, উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করলে পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতেই প্রায় এক বছর সময় লাগে। কিন্তু জিটুজি ভিত্তিতে হলে সময় অনেক কম লাগবে। সৌদি আরব, কাতার, আজারবাইজানসহ কয়েকটি দেশ নতুন ভাসমান টার্মিনাল নির্মাণে আগ্রহ দেখিয়েছে। কে সবচেয়ে দ্রুত এবং কম খরচে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে পারবে সেই আলোচনা চলছে।

 

সূত্র জানায়- বিদ্যুৎ, সার, শিল্পখাতসহ বিভিন্ন খাতে দেশে এখন গ্যাসের চাহিদা দৈনিক ৩ হাজার ৮৫৪ মিলিয়ন ঘনফুট। তবে গতকাল শুক্রবার গ্যাস সরবরাহ করা হয় ২ হাজার ৬২১ মিলিয়ন ঘনফুট। সরবরাহ করা গ্যাসের মধ্যে দেশীয় উৎপাদন দৈনিক ১ হাজার ৭৬৮ মিলিয়ন ঘনফুট। বাকি গ্যাস এলএনজি আকারে আমদানি করা হয়। নতুন টার্মিনাল হলে সরবরাহ করা গ্যাসের পরিমাণ অন্তত ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট বাড়বে।

 

তবে গ্যাস সরবরাহ বাড়াতে বিশেষজ্ঞরা নতুন টার্মিনালের পরিবর্তে কূপ খননে জোর দেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন। তারা বলছেন, নতুন টার্মিনাল নির্মাণ সময়োপযোগী হলেও এটি আমদানি নির্ভরতা আরও বাড়িয়ে তুলবে। যা ভবিষ্যতে গ্যাসের দাম নিয়ন্ত্রণে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই দেশীয় অনুসন্ধানে বিনিয়োগ বাড়ানো না গেলে এলএনজি নির্ভরতা অর্থনীতিকে আরও চাপের মুখে ফেলবে।

 

এ প্রসঙ্গে জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, দেশে প্রাথমিক জ্বালানির ঘাটতি এখন প্রকট। প্রতিদিন গ্যাসের উৎপাদন কমছে। গ্যাসের অভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখতে হচ্ছে, উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তাই অনুসন্ধান জোরদার করার পাশাপাশি নতুন এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

 

পূর্বকোণ/ইবনুর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট