
উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের উত্তর পদুয়ার আহমদ নজুর বাড়ির মো. সেলিম একজন সফল কৃষক। কৃষিতে তাঁর নিরলস পরিশ্রম বয়ে এনেছে সৌভাগ্য। কৃষিজ পণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি একদা তাঁর কৌতূহল সৃষ্টি হয় শীতকালীন তরমুজ চাষে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ গ্রহণ করেন। বর্তমানে নিজ এলাকায় এক একর জায়গায় তরমুজ চাষ করছেন। সম্প্রতি এলাকা পরিদর্শনকালে মালচিং বা মাচা পদ্ধতিতে সেলিমের শীতকালীন তরমুজ চাষে সবার আগ্রহ নজর কেড়েছে।
মো. সেলিমের সাথে আলাপচারিতায় তিনি জানান, জীবনযুদ্ধে মান-সম্মান নিয়ে টিকে থাকাই তাঁর একমাত্র ইচ্ছা। তাই ঝুঁকে পড়েন কৃষিজ পণ্য উৎপাদনে। কৃষিজ পণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি তাঁর আগ্রহ সৃষ্টি হয় আগাম শীতকালীন তরমুজ উৎপাদনে। ফলে বাড়ির অদূরে ঘোনা বিল এলাকায় তাঁর নিজস্ব জমিতে ২০২১ সালে ২০ শতক জায়গা আবাদ করে আগাম শীতকালীন তরমুজ চাষ শুরু করেন। স্থানীয় বীজ ভান্ডার থেকে পাখিজা সুপার নামক তরমুজ বীজ সংগ্রহ করেন। প্রতি ৫ গ্রাম বীজের প্যাকেট ৭শ টাকায় ক্রয় করে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শক্রমে জমিতে ওই বীজ বপন করেন। বীজ বপন, পরিচর্যা ও সার এবং কীটনাশক প্রয়োগসহ প্রতি গন্ডায় তাঁর খরচ হয় আনুমানিক ৪ হাজার টাকা। তিনি ওই বছরের আগস্টের প্রথম সপ্তাহের দিকে বীজ বপন করার পর ৭৫ বা ৮০ দিনের মধ্যে ফলন আসে। ফলন আসার পর পাইকারি ক্রেতারা তাঁর ক্ষেতে এসে প্রতিকেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা করে ক্রয় করে নিয়ে যান। প্রথমবারে তরমুজ চাষে লাভবান হওয়ায় পরবর্তীতে তিনি ক্ষেতের আবাদ বৃদ্ধি করেন। বর্তমানে প্রায় এক একর জায়গাজুড়ে উক্ত জাতের তরমুজ চাষ করেছেন। সময় মতো পরিচর্যা, সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করায় তাঁর ক্ষেতের প্রতিটি তরমুজের ওজন প্রায় ৩ কেজি থেকে ৭ কেজি পর্যন্ত হয় বলে চাষী মো. সেলিম আলাপকালে জানিয়েছেন।
স্থানীয় ডিপ্লোমা কৃষিবিদ মিনহাজ উদ্দীন জানান, যে কোন শাক-সবজির ক্ষেতের মালিক তাঁর কাছে পরামর্শের জন্য আসলে তিনি সাথে সাথে পরামর্শ দেন এবং প্রয়োজনে ক্ষেতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট চাষীকে উৎসাহিত করেন। তাঁরই ধারাবাহিকতায় তিনি তরমুজ চাষী মো. সেলিমকেও ক্ষেত পরিচর্যায় প্রতিনিয়ত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. কাজী শফিউল ইসলাম বলেন, তরমুজ চাষী মো. সেলিম একজন সফল কৃষক। তাঁর তরমুজ ক্ষেত সার্বক্ষণিক পরিদর্শন করে প্রায়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন উপজেলা সহকারী কৃষি অফিসার আনোয়ারুল আজিম। মো. সেলিমের কৃষিজ পণ্য উৎপাদনে অদম্য উৎসাহ-উদ্দীপনা অবশ্যই প্রশংসনীয়। তরমুজ চাষে তাঁর সফলতা উপজেলার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। এতে আগামীতে নতুনভাবে আরো উদ্যোক্তা সৃষ্টি হবে। এ ব্যাপারে তিনি তাঁর কৃষি অধিদপ্তর থেকে সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে যাবে বলে উল্লেখ করেছেন।
পূর্বকোণ/ইবনুর