
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শহিদ ফরহাদ হোসেন হলের তিনটি কক্ষে বিপুল পরিমাণ সিগারেটের অবশিষ্টাংশ, গাঁজা, মদ, হুইস্কিসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৫টায় হল প্রশাসন ও প্রক্টরিয়াল বডির যৌথ অভিযানে হলটির সি-ব্লকের ১০৮ ও ১০৪ নম্বর কক্ষ ও এ-ব্লকের ১০২ নম্বর কক্ষে এসব মাদক পাওয়া যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে হল প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এসব কক্ষে মাদকের রমরমা কারবার চলছিল। ১০৮ নম্বর কক্ষটি হল সংসদের জন্য বরাদ্দ থাকলেও এখানে অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করছেন ৫ শিক্ষার্থী। অভিযানে কক্ষটিতে বিপুল পরিমাণ সিগারেটের অবশিষ্টাংশ, মদ, হুইস্কি ও গাঁজা সেবনের বোতল পাওয়া গেছে। এ কক্ষে থাকেন মীর মাইনুল হাসান (ইংরেজি, ২০২১-২২), শুখন (আইইআর ২২-২৩), নাজমুল হাসান (ইতিহাস ২৪-২৫), সামিউল আলম সজল (লোক প্রশাসন, ২৪-২৫) ও মুশফিক অভি (স্পোর্টস সায়েন্স, ২৩-২৪)।
অন্যদিকে, ১০২ কক্ষে অভিযানে দুজন একসঙ্গে সরাসরি মাদক সেবন করতে দেখা গেছে। এ সময় তাদের কক্ষে মদ, গাঁজাসহ মাদক সেবনের বিভিন্ন দ্রব্য পাওয়া গেছে। এ কক্ষে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২৩-২৪ সেশনের আব্দুল সালাম, শাখাওয়াত হোসেন শুভ ও সিফাত মাদকের সাথে জড়িত। কিছুদিন আগে আব্দুস সালাম (ফেসবুকে নাম সালমান খান) তার দুই বন্ধু শুভ ও সিফাতের সঙ্গে মদ পান করার একটি ছবি তার ফেসবুক আইডির স্টোরিতে শেয়ার দেন। ছবিটি রাইজিংবিডি ডটকমের কাছে এসেছে।
১০৪ নম্বর কক্ষেও মাকদের বিভিন্ন আলামত পাওয়া গেছে। এ কক্ষে থাকেন মিনহাজুল ইসলাম ইকরা, আল রুমান, আবরার জাহিন লাবিব ও ইবরাজ হাসান মাহমুদ সামির। তারা তিনজন ক্রিমিনোলজি বিভাগের ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থী। আর আবরার জাহিন লাবিব যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের একই সেশনের শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে হলটির প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান বলেন, “১০৮ নম্বর কক্ষে অবৈধভাবে ৫ শিক্ষার্থী অবস্থান করছিল। তারা আমার কাছে গত ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত থাকার অনুমতি চাইলেও ১৫ তারিখের পরে তারা রুম ছাড়েনি দেখে আমি তালা লাগিয়ে দেই। এরপর তারা তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকেছে। পরে আমি গতকালের মধ্যে রুম ছাড়তে অফিসিয়াল নোটিশ দেই। কিন্তু তারা রুম ছাড়েনি, এমনকি নোটিশ ছিঁড়ে ফেলেছে। আজ বিকেলে ওই রুমে গিয়ে বিপুল পরিমাণ সিগারেটের অবশিষ্টাংশ, গাঁজা, ইন্ডিয়ান ব্রান্ডের হুইস্কির বোতলসহ বিভিন্ন মাদকের আলামত সরাসরি দেখেছি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী বলেন, “এমন অভিযোগ পেয়ে আমরা প্রক্টরিয়াল টিম নিয়ে কক্ষটিতে আসি। এখানে বিভিন্ন ধরনের মাদক দেখেছি। এছাড়া, আরো দুটি কক্ষেও মাদক পাওয়া গেছে। জড়িতের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পূর্বকোণ/আরআর