চট্টগ্রাম সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫

সর্বশেষ:

কক্সবাজার স্টেডিয়ামে হামলা-ভাঙচুর: দুটি তদন্ত কমিটি গঠন, মামলার প্রস্তুতি

কক্সবাজার প্রতিনিধি

১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ১২:১৮ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারে জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচকে কেন্দ্র করে স্টেডিয়ামে হামলা ও তাণ্ডবের ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ।
শনিবার দুপুরে স্টেডিয়াম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান জেলা প্রশাসক মো. সালাহ্উদ্দিন।
এর আগে জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপার মো. সাইফউদ্দীন শাহীনসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত স্টেডিয়ামটি ঘুরে দেখেন। জেলা প্রশাসক জানান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক)-এর নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি হামলার কারণ ও ভাঙচুরের বিষয়ে তদন্ত করবে। পাশাপাশি, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট-এর নেতৃত্বে গঠিত অপর কমিটি অতিরিক্ত টিকিট বিক্রি ও কালোবাজারির বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য গণপূর্ত বিভাগকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।

যা ঘটেছিল মাঠে :

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় রামু ও টেকনাফ উপজেলার মধ্যে ফাইনাল ম্যাচ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বেলা ১১টা থেকেই দর্শকরা স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে শুরু করেন। দুপুর ২টার মধ্যে ১০ হাজার ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামে ধারণার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি দর্শক প্রবেশ করে। একপর্যায়ে উত্তেজিত দর্শকরা গেট ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়েন, এতে স্টেডিয়ামজুড়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনীসহ বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাঠে উপস্থিত হন। তবে খেলা শুরুর নির্ধারিত সময়েও মাঠে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব হয়নি। পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে খেলা স্থগিতের ঘোষণা আসার পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মুহূর্তে হাজার হাজার দর্শক আবার মাঠে প্রবেশ করে এবং স্টেডিয়াম ভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনায় ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। ভেঙে ফেলা হয় ড্রেসিং রুম ও প্রেসবক্সের কাঁচ, উপড়ে ফেলা হয় গোলপোস্ট। এসময় পুলিশ দর্শকদের ওপর লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। এই সংঘর্ষে কক্সবাজার সদর উপজেলার ইউএনও নিলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী, সদর থানার ওসি (তদন্ত) ফারুক হোসেন, পুলিশ, আনসার সদস্য এবং একাধিক সাংবাদিকসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন।

পুলিশ সুপার মো. সাইফউদ্দীন শাহীন জানান, ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত দর্শক প্রবেশ এবং অতিরিক্ত মূল্য দিয়েও টিকিট সংগ্রহ করেও অনেকে মাঠে ঢুকতে না পারায় এমন ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, ঘটনার সময় স্টেডিয়ামের ভেতরে প্রায় ৫০ হাজার দর্শক ছিল। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সর্বোচ্চ ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন, যার ফলে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন জানান, টিকেট ইজারাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে ও ২টি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। এছাড়া আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

এদিকে, এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর থানার ওসি মো. ইলিয়াস খান। তবে তিনি বলেন, পুলিশের ওপর হামলার বিষয়েও মামলা দায়ের করা হবে এবং সামগ্রিক বিষয় নিরূপণ করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, জেলা প্রশাসন কর্তৃক এজেহার জমা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

পূর্বকোণ/এরফান/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট