
কক্সবাজারের পেকুয়ায় খেলার ছলে কুতুবদিয়া চ্যানেলের মগনামা এলাকায় কাঁকড়া ধরার সময় পানিতে ডুবে হাফেজ সাখাওয়াত হোসাইন ওয়াপি (৮) নিখোঁজ হয়। পরে সাত ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পর তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুর ১টায় পেকুয়ার মগনামা লঞ্চ ঘাটের উত্তর পাশে ১ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম শরৎঘোনা স্লুইচ গেট সংলগ্ন এলাকায় সাখাওয়াত হোসাইন খেলতে গিয়ে পানিতে পড়ে নিখোঁজ হয়।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই এলাকার কয়েকজন ছেলের সঙ্গে খেলতে গিয়ে শিশুটি কাঁকড়া ধরার চেষ্টা করছিল। সেই সময় ভাটা শেষ হয়ে জোয়ার শুরু হয়েছিল এবং হঠাৎ করে স্রোতের মধ্যে পড়ে সে পানিতে ডুবে যায়।
স্থানীয়রা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও শিশুকে উদ্ধার করতে পারেনি। পরে খবর পেয়ে পেকুয়া ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযানে যায়। তবে তখন ডুবুরি না থাকার কারণে তারা শিশুটি খুঁজে বের করতে পারেনি। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে স্লুইচ গেটের নিচের পানির ভেতর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত শিশু সাখাওয়াত হোসাইন ওয়াপি চকরিয়া উপজেলার মালুমঘাট এলাকার রেজাউল করিমের ছেলে। তার পরিবার কয়েক মাস আগে মগনামায় একটি ভাড়া বাসায় এসে বসবাস করতে শুরু করেছে। শিশুর পিতা রেজাউল করিম পেশায় জেলে এবং স্থানীয়ভাবে বোটে মাছ ধরার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করেন। সাখাওয়াত স্থানীয় একটি হেফজখানার ছাত্র।
মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান বদিউল আলম বলেন, দুপুরের দিকে সাখাওয়াত হোসাইন বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে খেলার ছলে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিল। তখন পানিতে পড়ে নিখোঁজ হয়। রাতের দিকে মরদেহ উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, শিশুটি উদ্ধার করা হলে হাসপাতালে আনা হয় রাত ৮টার দিকে। তিনি বলেন, উদ্ধারের সময় শিশুটি ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছিল, সম্ভবত ৪-৫ ঘণ্টা আগে মৃত্যু হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, তারা দীর্ঘ সময় উদ্ধার অভিযান চালিয়েছিল। তবে ডুবুরি না থাকায় প্রথমে সফল হতে পারেনি। মৃতদেহ উদ্ধারের সময় রাতের অন্ধকারেও হাজারো মানুষ উপস্থিত ছিল। নিহত শিশুর পিতামাতা এবং পরিবারের সদস্যরা কাঁদতে কাঁদতে আহাজারি করছিল। পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
পূর্বকোণ/এমরান/জেইউ/পারভেজ