
দেড় শ বছরের ইতিহাস বয়ে আনা জলাশয়টি ছিল গ্রামের শীতলতার ঠিকানা, মাছের চাষ আর দৈনন্দিন জীবনের আশ্রয়। সেই পুকুরই আজ নেই—ঢেকে গেছে মাটির স্তরে। পরিবেশ ধ্বংসের এই অভিযোগে রবিবার আদালতের নির্দেশে জনপ্রতিনিধিসহ পাঁচজনের স্থান হলো কারাগারে।
দুপুরে চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মাহমুদুল হক তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
কারাগারে যাওয়া পাঁচজন হলেন—নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মুহাম্মদ খোরশেদুল ইসলাম (৫০), একই ইউনিয়নের পূর্ব কচুখাইন গ্রামের মুহাম্মদ জাহেদুল ইসলাম (৪৮), আলী আকবর (৬০), মকবুল আহমদ (৫৫) ও মুহাম্মদ খোরশেদ (৫২)।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, পূর্ব কচুখাইন মুহম্মদীয়া দরবার শরিফ- সংলগ্ন পুকুরটি প্রায় ১৬০ বছর আগে খনন করা হয়েছিল। ২০২১ সালে পুকুরটি ভরাটের উদ্যোগ নেন অভিযুক্তরা। স্থানীয়দের প্রতিবাদে কাজ বন্ধ হলেও ২০২৩ সালের শুরুর দিকে কর্ণফুলী নদীতে ড্রেজার বসিয়ে পাইপলাইনের মাধ্যমে আবারও ভরাট শুরু হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগের পর পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন ঘটনাস্থলে গিয়ে পুকুর ভরাটের সত্যতা পান। তবু রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কাজ শেষ করা হয়।
অভিযুক্তদের দাবি, মালিকদের সম্মতিতে কবরস্থান নির্মাণের জন্যই পুকুরটি ভরাট করা হয়েছে। তবে ২০২৩ সালের ৩১ মে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আফজারুল ইসলাম পরিবেশ সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের গবেষণা কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন বলেন, আসামিরা আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত তাদের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পুকুরটি স্থানীয় ইতিহাস ও পরিবেশের অংশ ছিল বলে জানাচ্ছেন গ্রামবাসী। তাদের মতে, এই জলাশয় শুধু মাছের চাষ আর পানির উৎসই ছিল না, বরং গ্রামীণ জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য স্মৃতি।
পূর্বকোণ/জাহেদ/জেইউ/পারভেজ