চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

লোহাগাড়া-হাটহাজারী : সচল হচ্ছে দুই ট্রমা সেন্টার
ফাইল ছবি

লোহাগাড়া-হাটহাজারী : সচল হচ্ছে দুই ট্রমা সেন্টার

ইমাম হোসাইন রাজু

৯ আগস্ট, ২০২৫ | ২:১৩ অপরাহ্ণ

দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত ও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও লোহাগাড়া উপজেলার ২০ শয্যার দুই ট্রমা সেন্টার অবশেষে চালু হতে যাচ্ছে। প্রশাসনিক অনুমোদন থাকা সত্ত্বেও অবকাঠামো, জনবল ও আর্থিক বরাদ্দের অভাবে দীর্ঘ সময় নিষ্ক্রিয় থাকার পর এবার বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে এ সেন্টারগুলো সচল করার চূড়ান্ত উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

 

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, পাইলট প্রকল্প হিসেবে প্রথমে লোহাগাড়া ট্রমা সেন্টার চালু করা হবে। এরপর ধাপে ধাপে সচল হবে হাটহাজারী কেন্দ্র। চলতি মাসের শেষ বা আগামী মাসের শুরুতেই লোহাগাড়ায় কার্যক্রম শুরু হতে পারে। দুটি সেন্টার পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল-কে (সিআইএমসিএইচ)। গত ২৮ জুলাই এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।

 

চট্টগ্রাম জেলার সঙ্গে তিন পার্বত্য জেলা ও পর্যটননগরী কক্সবাজারের সরু, দুর্ঘটনাপ্রবণ সড়ক যোগাযোগ রয়েছে। প্রতিদিন এসব সড়কে ঘটে সড়ক দুর্ঘটনা। যেখানে আহতদের অনেকেই সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে শহরে পৌঁছানোর আগেই প্রাণ হারান। এ বাস্তবতায় মহাসড়কের পাশে প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৩ সালে নির্মিত হয় লোহাগাড়া ট্রমা সেন্টার। ওই সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করার পরেও একদিনও কার্যক্রম শুরু হয়নি। একই অবস্থা হাটহাজারী ট্রমা সেন্টারেরও। ভবন থাকলেও বিদ্যুৎ সংযোগ, আসবাবপত্র, যন্ত্রপাতি ও প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় এতদিন তা বন্ধ ছিল।

 

স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ব্যবহার না হওয়ায় ভবন ও কক্ষগুলো সেবা প্রদানের জন্য পুরোপুরি উপযোগী ছিল না। প্রশাসনিক অনুমোদন থাকলেও জনবল ও আর্থিক বরাদ্দের অভাবে এতদিন সেন্টারগুলো চালু করা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি চট্টগ্রাম সফরে এসে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার নজরে আসলে তিনি বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সেন্টারগুলো চালুর নির্দেশনা দেন। এরপর চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালকে (সিআইএমসিএইচ) দায়িত্ব দেয়া হয় সেবা পুনরুজ্জীবিত করার।

 

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রশাসনিক অনুমোদন থাকা সত্ত্বেও জনবল ও আর্থিক বরাদ্দ না থাকায় ট্রমা সেন্টারগুলো দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। যেসব প্রতিষ্ঠান অতীতে চালু করা যায়নি। তা চালু করতে সরকার উদ্যোগী ভূমিকা পালন করছে। আমরা ইতোমধ্যে দুটি ট্রমা সেন্টারকে চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দিয়েছি। তারা যেন এগুলো দ্রুত চালু করে।

 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুই সেন্টার চালু হলে চট্টগ্রাম ও পার্শ্ববর্তী জেলার সড়ক দুর্ঘটনায় আহতরা দ্রæত চিকিৎসা পাবেন, যা বহু প্রাণ বাঁচাবে এবং জীবন রক্ষার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করবে।

 

ডেভেলপমেন্ট ফর এডুকেশন সোসাইটি এন্ড হেলথ (ডিইএসএইচ)-এর ইসি সদস্য সচিব ও চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. মুসলিম উদ্দিন সবুজ বলেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা আমাদের উপর আস্থা রেখেছেন এবং ট্রমা সেন্টার দুটির দায়িত্ব দিয়েছেন। আমরা ইতোমধ্যে অবকাঠামো সংস্কার শুরু করেছি। আশা করছি চলতি মাসের শেষে বা আগামী মাসের শুরুতে লোহাগাড়ায় কার্যক্রম শুরু করব। শুরুতে চারজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, চারজন নার্সসহ ১৬ জনের একটি চিকিৎসা টিম থাকবে। প্রয়োজনে জনবল বাড়ানো হবে এবং স্বাস্থ্য বিভাগও সহযোগিতা করবে।

 

পূর্বকোণ/ইবনুর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট