
তারা ছিলেন এলাকার ভরসার নাম। গায়ে সাদা এপ্রোন, টেবিলে স্টেথোস্কোপ আর মুখে জটিল রোগের সহজ সমাধানের প্রতিশ্রুতি—এই ভরসাতেই শত শত রোগী গিয়েছেন তাদের চেম্বারে। কিন্তু অল্প শিক্ষায় বড় চিকিৎসা সম্ভব নয়।
সাতকানিয়ার মো. এহসান হাবীব ও সুকুমার দে—দুজনই পল্লী চিকিৎসক, অথচ পরিচয় দিতেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হিসেবে। করতেন অপারেশনও, দিতেন জীবনরক্ষাকারী ওষুধ। ফলে ভুল চিকিৎসায় অনেকে ঝুঁকিতে পড়তেন, কেউ হয়তো অসুস্থই থেকে যেতেন দীর্ঘদিন।
বুধবার (৬ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার ঠাকুরদিঘীর পাড় ও ছমদিয়া পুকুর পাড় এলাকায় অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন। অভিযানে নেতৃত্ব দেন সাতকানিয়ার ইউএনও খোন্দকার মাহমুদুল হাসান। সঙ্গে ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মোজাম্মেল হক।
চেম্বারে ঢুকেই একের পর এক অনিয়মের খোঁজ মেলে। ওষুধের সঠিক ব্যবহার না জানা, অপারেশনের সরঞ্জাম অস্বাস্থ্যকর, আর ছিল না কোনো অনুমোদন। তবুও চিকিৎসা চলছিল পুরোদমে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত এহসান হাবীব ও সুকুমার দেকে ৫০ হাজার টাকা করে মোট এক লক্ষ টাকা জরিমানা করে। সেই সঙ্গে তাঁদের কাছ থেকে ভবিষ্যতে এমন অনিয়ম না করার প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করা হয়।
ইউএনও বলেন, চিকিৎসা মানুষের জীবন নিয়ে কাজ। ভুল করলে তার খেসারত বড়। তাই আমাদের এই অভিযান শুধু শাস্তি নয়, সতর্কবার্তাও।
সাধারণ মানুষ বলছে, প্রশাসনের এই পদক্ষেপ তাদের স্বস্তি দিয়েছে। কারণ ভুয়া চিকিৎসার ফাঁদে পড়ে যেন আর কারও মায়ের চোখ না ভেজে, কোনও সন্তানের জীবন না ঝরে—এমনটাই চায় তারা।
মানবিকতার নাম নিয়ে আর যেন কেউ প্রতারণা না করতে পারে, সেই আশাই এখন এলাকার মানুষের চোখে মুখে।
পূর্বকোণ/মুন্না/জেইউ/পারভেজ