
২৩ বছর পরে অবশেষে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপের একমাত্র জেটিটি নতুন করে নির্মাণ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে পাইলিংয়ের কাজ। পর্যটক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের দ্বীপে ওঠানামার একমাত্র ভরসা জেটি। তাই পর্যটন মৌসুমের আগেই যেন জেটির নির্মাণ কাজ করা হয় এমনটাই দাবি দ্বীপের বাসিন্দাদের।
এদিকে গুণগত মান বজায় রেখে দ্রæতই জেটির নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে বলে জানিয়েছে ঠিকাদার। বঙ্গোপসাগরের মধ্যে ৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের দ্বীপ সেন্টমার্টিন। পর্যটক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের দ্বীপে ওঠানামার একমাত্র ভরসা পূর্ব সৈকতের জেটি। কিন্তু ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডরের আঘাতে জেটির কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর টানা ১১ বছর জেটিটির সংস্কার হয়নি।
কয়েক বছর ধরে জেলা পরিষদ কিছুটা সংস্কার করলেও জেটির এখন নাজুক অবস্থা। জেটির দুই পাশের রেলিং ভেঙে পড়েছে। ইট-সিমেন্ট খসে পড়ছে। পাটাতন ভেঙে যাওয়ায় কাঠের তক্তা বিছিয়ে কোনরকম চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়। এরপর থেকেই দ্বীপবাসীর দাবি উঠে, নতুন জেটি নির্মাণের। অবশেষে শুরু হয়েছে সেন্টমার্টিন দ্বীপে নতুন জেটি নির্মাণের কাজ। এখন চলছে পাইলিংয়ের কাজ। থাকছে ৭০টি পিলার। দ্বীপের বাসিন্দারা বলছেন, জেটি নির্মাণের ফলে দুর্ভোগ লাঘব হবে পর্যটক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
দ্বীপের বাসিন্দা মো. আবুল হোছাইন বলেন, দীর্ঘদিন থেকেই সেন্টমার্টিনবাসীর দাবি ছিল নতুন একটা জেটি নির্মাণের। এই জেটি নির্মাণ হলে দ্বীপবাসীর পাশাপাশি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে শুরু করে ভ্রমণে আসা পর্যটকরা সুবিধা পাবেন।
নুর মোহাম্মদ বলেন, পুরনো জেটিটা ছিল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। প্রতিবছরই দুর্যোগে জেটিটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন যেহেতু করে জেটি পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে আশা করি, কাজের মানটা যেন ভাল হয়।
দ্বীপের আরেক বাসিন্দা আবদুর রহমান বলেন, সেন্টমার্টিনে পর্যটন মৌসুমে যারা আসবেন তাদের স্বাভাবিক ও নিরাপদভাবে যাতায়তের জন্য ঝুঁকিহীন জেটির বিকল্প নেই। তাই এখন যে জেটিটি হচ্ছে তাতে যেন কোন ধরনের অনিয়ম করা না হয়।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, নতুন জেটির বাড়ছে উচ্চতা। রেলিংসহ নানা কাজে লোহার পরিবর্তে লাগানো হবে স্টিলের অবকাঠামো। থাকছে দুটি সিঁড়িও। যার কারণে জেটি নির্মাণের বরাদ্দ প্রায় ৭ কোটি টাকা। পর্যটনের মৌসুমের আগেই শেষ হবে জেটির নির্মাণ কাজ।
সেন্টমার্টিনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এস এস রহমান ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের প্রতিনিধি মো. আলী হায়দার বলেন, টার্গেট হচ্ছে আগামী ৩ মাসের মধ্যে এই জেটির নির্মাণ কাজ শেষ করা। সে লক্ষ্যে নতুন জেটির নির্মাণ কাজ গত মে মাস থেকে শুরু হয়েছে। নভেম্বর থেকে পর্যটন মৌসুম শুরু হবে। তাই অক্টোবরের শেষ দিকে যাতে জেটির নির্মাণ কাজ শেষ হয় সেই টার্গেটে কাজ চলছে।
কক্সবাজার জেলা পরিষদের প্রতিনিধি আবদুল মাজেদ বলেন, জেটি নির্মাণের পুরো কাজ তদারকি করছে জেলা পরিষদ। এরমধ্যে কাজ অনেকাংশে এগিয়েছে। তবে বৈরি আবহাওয়ার জন্য কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। কাজের গুণগত মান বজায় রেখে টার্গেট অনুযায়ী কাজ শেষ করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে জেটিটি নির্মাণ করে দেয়। এরপর জেটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নেয় কক্সবাজার জেলা পরিষদ।
পূর্বকোণ/ইবনুর