
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে নিখোঁজের তিনদিন পর নয়ন কুমার নাথ (২৯) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নয়ন কুমার নাথ সীতাকুণ্ডের মুরাদপুর ইউনিয়নের মুরাদপুর গ্রামের কালা চাঁদের বাড়ির বাবুল চন্দ্র নাথের ছেলে।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকালে উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়ন এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহতের মা মীরা রানী দেবী ও তার বাবা বাবুল চন্দ্র নাথ জানান, নয়ন সীতাকুণ্ড বাজারের একটি দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করত। কিন্তু কতিপয় ব্যক্তির সাথে লেনদেনে জড়িয়ে যায় সে। গত মঙ্গলবার পাওনাদারদের মধ্যে কেউ তাকে টাকা পরিশোধের জন্য প্রবল চাপ প্রয়োগ করে। এতে দিশেহারা হয়ে নয়ন তার মায়ের কাছে এসে জানায় টাকা দিতে না পারলে তাকে দুস্কৃতিরা মেরে ফেলবে। তাই মায়ের গয়নাগুলো দিলে সে তাদেরকে দিয়ে আবার কয়দিন পর সেগুলো ছাড়িয়ে আনবে। ছেলের অবস্থা দেখে মা ৩ ভরি স্বর্ণালংকার ছেলের হাতে তুলে দেন। সেগুলো নিয়ে বের হবার অল্প সময় পর থেকে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। ছেলেকে খুঁজে না পেয়ে তার মা মীরা রানী দেবী মঙ্গলবার সীতাকুণ্ড থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন এবং খোঁজাখুঁজি অব্যহত রাখেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে এলাকাবাসী বাড়ির কাছেই একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় নয়নের রক্তাক্ত ও অর্ধ পঁচা লাশ দেখতে পায়। এতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার মা-বাবা ও স্বজনরা।
নয়নের বাবা বলেন, ছেলেকে কেউ মেরে রক্তাক্ত করে ঝুলিয়ে দিয়েছে। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে মেয়ে বিবাহিত। অপর এক ছেলে গত ৮ বছর আগে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা যায়। সংসারের শেষ ভরষা নয়নকেও কেউ হত্যা করেছে। এখন কি নিয়ে বাঁচবেন তারা এমন আহাজারি করতে করতে বিলাপ করছিলেন হতভাগ্য মা-বাবা।
নয়নের এক প্রতিবেশি উন্নয়ন কর্মী স্বপন নাথ বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে লাশ পাওয়া যায়। কিন্তু লাশ পঁচে, ফুলে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে গেছে। এ থেকেই বোঝা যায় তাকে আগেই হত্যা করা হয়েছিল। শেষে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে লাশ বাড়ির কাছে এনে ঝুঁলিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া মৃতদেহে প্রচুর রক্ত ছিল। আত্মহত্যা করলে কখনোই এরকম রক্তাক্ত জখম হবার কথা নয়।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মজিবুর রহমান বলেন, কেউ খুন করলে লাশ বাড়ির কাছে এনে ঝুলিয়ে রাখবেন কেন? তবে আমরা লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে এটি হত্যা না আত্মহত্যা তা বুঝতে পারব।
পূর্বকোণ/পিআর