
কক্সবাজারের পর্যটন এলাকা কলাতলীতে অটোরিকশা ব্যবহার করে ফিল্মি কায়দায় এক পর্যটকের মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (১২ জুলাই) রাত ৯টার দিকে শহরের কলাতলীর ওশান প্যারাডাইস সংলগ্ন প্রধান সড়কে এই ঘটনা ঘটে।
তবে তাৎক্ষণিক তৎপরতায় এক ছাত্রদলকর্মী ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় এক ছিনতাইকারীকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হলেও, মোবাইল উদ্ধারে পুলিশের অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী পর্যটক।
ভুক্তভোগী মো. সুমন মিয়া, যিনি ঢাকার আব্দুল্লাহপুরের বাসিন্দা এবং বিজিএমইএ বস্ত্র প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র। তিনি জানান, রাতে তার বন্ধু ফেরদৌসের ফোন ছিনতাইকারীরা অটোরিকশা নিয়ে এসে কেড়ে নেয়। তারা প্রতিরোধ করতে চাইলে ছিনতাইকারীরা ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় ছাত্রদলকর্মী মির্জা নামের এক যুবক স্থানীয়দের সাথে নিয়ে একজনকে ধাওয়া করে আটক করতে সক্ষম হন। পরে আটক ছিনতাইকারীকে ট্যুরিস্ট পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সুমন মিয়া অভিযোগ করেন, ট্যুরিস্ট পুলিশ আটক ছিনতাইকারীকে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় পাঠিয়ে দেয় এবং মোবাইল উদ্ধারের জন্য সেখানেই আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলে। কিন্তু কক্সবাজার সদর থানায় গিয়ে ভুক্তভোগীরা আরও হতাশ হন।
সুমন মিয়া জানান, কক্সবাজার সদর থানায় আটক ছিনতাইকারীকে নিয়ে মোবাইল উদ্ধার না করে উল্টো মামলা করার জন্য বলা হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা যেহেতু ঢাকার বিজিএমইএ বস্ত্র প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র এবং সামনে তাদের পরীক্ষা, তাই মামলা করলে আবার কক্সবাজার আসতে হবে বলে তারা উদ্বিগ্ন।
সুমন বলেন, এই ঘটনায় সদর থানা পুলিশের কোনো তৎপরতা দেখছি না, তাই আমরা মোবাইল ফোনের আশা ছেড়ে দিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্য চলে যাচ্ছি।
কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস খান বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের একটি দল ছিনতাইকারীকে সদর থানায় সোপর্দ করার পর ভুক্তভোগী পর্যটক মোবাইল উদ্ধারের অনুরোধ করেন।
ওসি জানান, তারা ভুক্তভোগীকে মামলা করার পরামর্শ দিলে তিনি অভিমান করে মামলা না করেই ঢাকায় চলে যান। পরবর্তীতে থানা পুলিশ নিজেরাই মামলা দায়ের করে এবং ছিনতাইকারীকে রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেছে। এছাড়া, উদ্ধারকৃত মোবাইলের আইএমইআই নম্বর যাচাই করে সেটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, কক্সবাজার সদর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে পর্যটকদের হয়রানি ও ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ নতুন নয়। এর আগেও একাধিকবার এমন অভিযোগ উঠেছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং ছিনতাইকারীদের অপতৎপরতা বন্ধে সদর থানা পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ বলে একাধিক স্থানীয় ব্যক্তি ও পর্যটকরা মন্তব্য করেছেন। এই ঘটনা আবারও পর্যটন নগরীর নিরাপত্তাব্যবস্থা এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
পূর্বকোণ/এরফান/জেইউ/পারভেজ