চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫

সর্বশেষ:

টেকনাফ জিরো পয়েন্টে জাতীয় পতাকা হাতে সাজ্জাদ

সাইকেলে তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ এলেন এক শিক্ষার্থী

টেকনাফ সংবাদদাতা

১৩ এপ্রিল, ২০২৫ | ১১:২৬ অপরাহ্ণ

এক হাজার একশ কিলোমিটারের পথ পাড়ি দিয়ে টেকনাফে এসেছেন সাজ্জাদ হোসেন সাগর নামে ২৪ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী। তার যাত্রা শুরু হয়েছিল দেশের এক প্রান্ত তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট থেকে। আর শেষ হয়েছে আরেক প্রান্তে টেকনাফ জিরো পয়েন্টে।

তিনি কোনো পেশাদার অ্যাথলেট নন। নন কোনো বিখ্যাত পরিবেশবাদীও। একজন সাধারণ শিক্ষার্থী। ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি চিটাগং-এ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছেন। তবে ভাবনার গভীরতায় এবং সাহসে তিনি অনেক ‘অসাধারণ’ মানুষকেও পেছনে ফেলেছেন। সাজ্জাদের এই ছয় দিনের সাইকেল যাত্রার পেছনে একটি গভীর বার্তা ছিল- জলবায়ু পরিবর্তন, বৈশ্বিক উষ্ণতা এবং প্রকৃতির ওপর মানুষের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে জনসচেতনতা তৈরি করা।

 

সাজ্জাদ হোসেন বলেন, মানুষের অসতর্ক কর্মকাণ্ড, জীবাশ্ম জ্বালানির অতিরিক্ত ব্যবহার, বন উজাড় এ সবই পৃথিবীর জন্য হুমকি হয়ে উঠছে। আমি চাই, আমার মতো যুবকরাও এগিয়ে আসুক এই পরিবর্তনের কথা ভাবতে।

৭ এপ্রিল দুপুর ২টায় যাত্রা শুরু করেন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকে। প্যাডেল ঘুরতে থাকে, ঘুরতে থাকে তার আশাও। প্রথম রাত কাটে বোদা, দ্বিতীয় রাত সিরাজগঞ্জের ভূইয়াজ্ঞাতি, এরপর ঢাকার দক্ষিণ বনশ্রী, চতুর্থ রাত চট্টগ্রামের মিরসরাই নিজামপুর কলেজ, পঞ্চম রাত কক্সবাজারের পেকুয়া বাজার এবং ষষ্ঠ দিন (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় টেকনাফ জিরো পয়েন্টে এসে যাত্রার সমাপ্তি।

টেকনাফ জিরো পয়েন্টে শেষ গন্তব্যে পৌঁছলে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা তাকে স্বাগত জানান। এ সময় তার চোখে তখন ক্লান্তি নয়, বরং স্বপ্ন সফল করার আনন্দ।

চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার অভয় পাড়ার ছেলে সাজ্জাদ। পরিবারের মধ্যে সবার ছোট। বাবা ছিলেন গাড়িচালক, মা একজন গৃহিণী। দুই ভাই, চার বোনের পরিবারের ছোট সন্তানটি বরাবরই স্বপ্ন দেখেন একটু ভিন্নভাবে কিছু করার।

 

পরিবারের সহযোগিতা প্রসঙ্গে সাজ্জাদ বলেন, আমার পরিবার সবসময় আমাকে মানসিকভাবে সাপোর্ট দিয়েছে। আমার মা-বাবার কঠিন পরিশ্রম আমাকে অনুপ্রাণিত করে। আমি মনে করি, আমি একা নই, সঙ্গে আছেন একঝাঁক ভালোবাসার মানুষ। এই সারা পথজুড়ে নানা শহরে আমাকে সাহায্য করেছেন বন্ধু, সহযাত্রী, সাইক্লিং কমিউনিটির সদস্যরা।

দ্বি চক্রযান, লিও জেলা ৩১৫ বি-৪, লায়ন্স ক্লাব অব চিটাগাং পারিজাত এলিট এবং ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই সহযোগিতা করেছেন। আমি তাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় বলে জানান।

পূর্বকোণ/কাশেম/জেইউ/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট