ফেরিঘাটকে কেন্দ্র করে বদলে গেছে সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া উপকূল। বেড়িবাঁধ থেকে সাগর পর্যন্ত তৈরি করা সুপ্রশস্ত নতুন সড়ক এ উপকূলের সৌন্দর্য অনেকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। কয়েকদিন ধরে ফেরিঘাট এলাকায় ছুটে আসছেন সৌন্দর্যপিপাসু মানুষ। এতে এলাকায় পর্যটকের আগমন আরও বৃদ্ধি পেয়ে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁশবাড়িয়া বেড়িবাঁধ থেকে নতুন সুপ্রশস্ত একটি সড়ক ফেরিঘাট পর্যন্ত গিয়ে দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে দু’দিকে চলে গেছে। একটি সড়ক নেমে গেছে ফেরিঘাটে, আরেকটি সড়ক গিয়ে মিশেছে সমুদ্রের নীল জলরাশিতে। এই সড়ক হয়ে সাগরের দিকে যত এগিয়ে যাওয়া যায় ততই যেন মন বিমোহিত হয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে। বিশেষ করে পড়ন্ত বিকেলে সড়কটি পর্যটকদের কাছে বাড়তি আকর্ষণে পরিণত হয়।
গত সোমবার প্রথমবারের মতো সীতাকুণ্ড-সন্দ্বীপ ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন উপলক্ষে যাত্রীদের পাশাপাশি বহু পর্যটকের আগমন ঘটে। এ সময় কথা হয় তাদের কয়েকজনের সাথে। বাঁশবাড়িয়া আকিলপুরের বাসিন্দা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ফেরি চালুর জন্য এই এলাকায় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সড়ক উন্নয়ন, সমুদ্র ড্রেজিং, গ্রাম্য সড়কের আশপাশ সম্প্রসারণসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়।
প্রথমদিকে আমাদেরও সন্দেহ ছিল- আদৌ এসব কাজ এত অল্পসময়ে শেষ হবে কিনা। পরে দেখি শুধু কাজই শেষ হয়নি, এত সুন্দর ও যত্ন করে সেনাবাহিনী কাজ করেছে যে, এখন এটি অপরূপ একটি পর্যটনস্পটে পরিণত হয়েছে।
ফেরি সার্ভিস উদ্বোধনের কথা শুনে এই ঘাটে এসেছেন চট্টগ্রামের স্বপন চৌধুরী, মিরসরাইয়ের মো. নিজাম উদ্দিনসহ আরও অনেকে। তারা সবাই প্রায় অভিন্ন বক্তব্য রেখে বলেন, ঘাটকে কেন্দ্র করে প্রশস্ত যে রাস্তাটি সাগর পর্যন্ত তৈরি হয়েছে, সেটি আসলেই এ উপকূলের সৌন্দর্য বহুগুণ বৃদ্ধি করেছে। আমরা ফেরি দেখতে এসেছিলাম। ফেরি চলে যাবার পর লক্ষ্য করলাম ঘাট ও সমুদ্র উপকূলের পরিবেশটা আসলেই ভালো লাগছে।
তারা আরও বলেন, দ্রুততম সময়ে উদ্বোধন করায় সড়কটি এখনও পাকা করা হয়নি। এটি পাকা করে সড়কের আশপাশে কিছু বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করলে এই ঘাটের আশপাশের এলাকা অচিরেই অপরূপ পর্যটনস্পটে পরিণত হবে। আর একই কারণে যখন পর্যটকের সংখ্যা বাড়তে থাকবে তখন এখানে আরও নতুন নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার মাধ্যমে এলাকার অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, উপকূলটিকে সাজিয়ে পর্যটকদের জন্য আরও আকর্ষণীয় করতে জেলা প্রশাসন কাজ করবে। এখানে যাত্রী ও পর্যটকদের জন্য পাবলিক টয়লেটও নির্মাণ হবে শীঘ্রই। এছাড়া আরেকটি বিষয় নিয়ে কাজ শুরু হবে। কুমিরা ঘাট থেকে বাঁশবাড়িয়ায় বেড়িবাঁধ হয়ে আসার জন্য সড়ক তৈরি করে সেটিরও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হবে, যেন যাত্রীরাও মনোরম পরিবেশে যাতায়াত করেন। এছাড়া যেসব পর্যটক এখানে আসবেন তারাও যেন সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন।
পূর্বকোণ/ইব