চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারি, ২০২৫

টেকনাফে অপহরণ বন্ধে সেনা অভিযানের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি

টেকনাফ সংবাদদাতা

৫ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৮:৫০ অপরাহ্ণ

টেকনাফে ধারাবাহিক অপহরণের ঘটনায় সাধারণ মানুষ চরম আতঙ্কে রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে টেকনাফের পাহাড়ে সেনা বাহিনীর নেতৃত্বে বিশেষ অভিযানের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

রবিবার (৫ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় টেকনাফের বাসিন্দা কবি ও সাংবাদিক নুপা আলমের ব্যক্তিগত উদ্যোগে কক্সবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। সেখানে বিভিন্ন পেশাজীবী, রাজনীতিবিদসহ অনেকেই সংহতি জানিয়ে তার পাশে অবস্থান নেন।

সূচনা বক্তব্যে নুপা আলম বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে টেকনাফের পাহাড় কেন্দ্রিক রোহিঙ্গা ও স্থানীয় কতিপয় অপরাধীর নেতৃত্বে স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী পাহাড়ে অবস্থান নিয়েছে। যারা কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে সাধারণ স্থানীয় মানুষ ও রোহিঙ্গাদের অপহরণ করে পাহাড়ে জিম্মি করে আসছে। ওখানে নিমর্ম নির্যাতন পরবর্তি মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা ও হত্যা ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে। শুধু গত এক বছরের মধ্যে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৯২ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। যাদের বেশিভাগই মুক্তিপণ দিয়ে ফিরতে হয়েছে। এতে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া, হোয়াইক্যং ও হ্নীলা ইউনিয়ন পুরোটাই পাহাড় ঘেঁষে। টেকনাফ সদর ইউনিয়ন ও পৌরসভার কিছু এলাকায়ও পাহাড় রয়েছে। এই ৪টি ইউনিয়নের মানুষ এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় এবং আতংকে রয়েছেন। দুর্গম পাহাড় ঘিরে কয়েকটি স্বশস্ত্র গোষ্ঠি রয়েছে। যাদের সংখ্যা ৩-৪ শতের মতো। যারা পাহাড়ে পাহাড়ে তৈরি করেছে বিশেষ আস্তানা। কিছু সংখ্যক স্থানীয়দের আশ্রয় প্রশ্রয়ে চলছে এমন অপরাধ। বিগত সরকারের সময় এই চক্রটিকে কতিপয় প্রভাবশালীর সখ্যতার অভিযোগ ছিল। কিন্তু ৫ আগস্ট পরবর্তি সময়ে এসেও তা বন্ধ না হওয়ায় উদ্বেগ-উৎকন্ঠা বেড়েছে বহুগুণ। গত এক সপ্তাহে অপহরণ হয়েছে ৩০ জন। যার মধ্যে দুইজন এখনও জিন্মি রয়েছে। টেকনাফের মানুষ মনে করেন সেনা বাহিনীর নেতৃত্বে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হলে এই ভয়াবহ অপরাধ রোধ করা সম্ভব’।

এতে বক্তব্য রাখেন টেকনাফ উপজেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট হাসান সিদ্দিকী, টেকনাফের ব্যবসায়ী এইচএম ওসমান গণি, চাকুরিজীবী হাসান আলী, সাংবাদিক আহসান কুতুবি, সাজন বড়ুয়া, মুহিব উল্লাহ মুহিব, ইব্রাহিম, মোহাম্মদ রাসেল প্রমুখ।

কর্মসূচি শেষে প্রধান উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এসময় টেকনাফের বাসিন্দা অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীসহ অবস্থান কর্মসূচিতে থাকা সকলে উপস্থিত ছিলেন। স্মারকলিপি গ্রহণ করে জেলা প্রশাসকের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নিজাম উদ্দিন আহমদ।

এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নিজাম উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘টেকনাফের অপহরণের বিষয়ে প্রশাসন অবহিত রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান অব্যাহত রাখলেও রোধ করা যাচ্ছে না। স্মারকলিপি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে’

পূর্বকোণ/কাশেম/জেইউ/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট