বান্দরবানের লামায় সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদের জায়গায় স্থানীয়দের তৈরি করা ১৭টি বসতঘর জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনায় ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন ও পুলিশ সুপার মো. শহীদুল্লাহ কাওছার।
এদিকে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির নির্দেশ দিয়েছেন পার্বত্য উপদেষ্টা সু প্রদীপ চাকমা। এ ঘটনায় তিনি এক বিবৃতিও দিয়েছেন।
গতকাল বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার সরই ইউনিয়নের টঙ্গা ঝিড়ি এলাকায় বেতছড়া নতুন পাড়ায় ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ১৭টি বসতঘর আগুনে পুড়িয়ে দেয়। বর্তমানে ওই এলাকার লোকজন এখন শীতের মধ্যে মানবেতর জীবনযাপন করছে। একই সাথে নতুন করে হামলার আশঙ্কায় এলাকার লোকজনদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদের লোকজন এ ঘটনায় জড়িত রয়েছে।
স্থানীয় লোকজন ও এলাকার জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ তার স্ত্রীর নামে লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের টঙ্গা ঝিড়ি এলাকায় প্রায় ১০০ একর জায়গা দখল করে। এসব জায়গাগুলো স্থানীয় পাহাড়ি ও বাঙালিদের ছিল। এছাড়া সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নে আরও পঞ্চাশ একর জায়গা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে দখল করেন বেনজির আহমেদ। ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর সুয়ালক এলাকায় ২৫ একর জায়গা প্রশাসন দখলে নিয়ে বাগানবাড়ি সিলগালা করে দেয়। তবে লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের জায়গাগুলো ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ক্ষতিগ্রস্ত ১৯টি পরিবার পুনরায় দখলে নিয়ে সেখানে একটি নতুন বেতছড়া পাড়া তৈরি করে। তবে গত ২৪ ডিসেম্বর ওই পাড়ার লোকজন বড়দিনের উৎসব ও প্রার্থনায় যোগ দিতে পার্শ্ববর্তী টঙ্গা ঝিড়ি পাড়ায় গেলে দুর্বৃত্তরা ১৭ টি বসতঘর আগুনে জ্বালিয়ে দেয়। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইদ্রিস জানান, কারা আগুন দিয়েছে এটি এখনো জানা যায়নি। তবে জায়গা জমি নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে সেখানে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল।
জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন জানিয়েছেন, এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের রক্ষা নেই। এ বিষয়ে প্রশাসন গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। যারা জড়িত তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সুপার মো. শহীদুল্লাহ কাওছার জানান, ইতিমধ্যে এই ঘটনায় মামলা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ পুরো বিষয়টি তদন্ত করছে।
পূর্বকোণ/পিআর