শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করে কক্সবাজারে লাখো পর্যটকের ঢল নেমেছে। সমুদ্র সৈকত থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র, সবখানেই পর্যটকদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। ছুটির দিন ছাড়াও গতকাল রবিবার সরজমিনে দেখা যায়, সৈকতের লাবনী পয়েন্ট থেকে কলাতলী হয়ে হিমছড়ি ইনানী পর্যন্ত হাজার হাজার পর্যটকের কোলাহলে মুখর।
পর্যটকদের এই ঢলের ফলে কক্সবাজারের হোটেল-মোটেলগুলোতে রুমের অভাব দেখা দিয়েছে। মধ্য জানুয়ারি পর্যন্ত অনেক হোটেলের রুম আগেই বুকিং হয়ে গেছে। হোটেল ব্যবসায়ীরা এই ‘অতিথি’ আগমনে খুশি এবং তারা মনে করছেন, এ ধরনের ভিড় মার্চ মাস পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এদিকে, কক্সবাজারে পর্যটকদের ভিড়ের সুযোগ নিয়ে কিছু হোটেল অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মধ্য জানুয়ারি পর্যন্ত অনেক হোটেলের রুম বুকিং হয়ে যাওয়ায় সরাসরি যোগাযোগ করে রুম না পাওয়া গেলেও দালালদের মাধ্যমে অতিরিক্ত দাম দিয়ে রুম বুকিং সম্ভব হচ্ছে।
হোটেল মালিকরা অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত পর্যটকরা জানিয়েছেন, কক্সবাজারে হোটেল ভাড়া স্বাভাবিকের তিনগুণ পর্যন্ত বেড়ে গেছে। অনেক পর্যটক সরাসরি হোটেলে যোগাযোগ করেও রুম পাননি। কিন্তু দালালদের মাধ্যমে অতিরিক্ত দাম দিয়ে রুম বুকিং করা সম্ভব হয়েছে। বিশেষ করে পাঁচ তারকা হোটেলের ক্ষেত্রে এ ধরনের অভিযোগ বেশি শোনা গেছে। পর্যটকরা আরও জানিয়েছেন, খাবারের দামও অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। অনেক খাবার হোটেলে খাবারের দাম দ্বিগুণের বেশি নেওয়া হচ্ছে। প্রতিবাদ করলে অনেক সময় পর্যটকদের হয়রানিও করা হচ্ছে।
এ নিয়ে প্রশাসনসহ ভোক্তা অধিকারকে উল্লেখযোগ্য কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি এখন পর্যন্ত। খাবারের মান ও দামসহ হোটেল রুমের কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে বেশি টাকা আদায়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পর্যটকেরা। অন্যদিকে, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন ও ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করছে। সৈকতগুলোতে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার ও নিয়ন্ত্রণকক্ষ স্থাপন করা হয়েছে।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম জানিয়েছেন, তারা পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছেন। সৈকতে পর্যটকদের উচ্ছ্বাস যেন কোন দুর্ঘটনার কারণ না হয়, সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
পূর্বকোণ/ইব