কক্সবাজারের মহেশখালীতে পাহাড় থেকে পাচারকালে পৃথক অভিযানে ৭টি বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণী হনুমান উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকালে উপজেলার মুদিরছড়া বিটের আওতাধীন এলাকা থেকে ২টি ও একই দিন রাত সাড়ে ৮টায় উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের মুদিরছড়া বিটের আওতাধীন কালামদিয়া এলাকা থেকে ৫ হনুমান উদ্ধার করা হয়। তবে এ সময় কাউকে আটক করতে পারেনি বন বিভাগ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহেশখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা এনামুল হক। তিনি বলেন, খবর পেয়ে সন্ধ্যায় মুদিরছড়া বনে ও রাত ৯টার সময় দিনেশপুর বিটের জাম বাগান গিয়ে হনুমানগুলো বনে অবমুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার ছোট মহেশখালী মুদিরছড়া বিট ও শাপলাপুরের দিনেশপুর বিট এলাকা থেকে বিলুপ্ত প্রায় ৭টি বন্যপ্রাণী হনুমান পাচারের জন্য বস্তায় ছিদ্র করে আটকে রেখে পাচার করছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মুদির ছড়া বিট কর্মকর্তা মোহাম্মদ আকতার ও দিনেশপুর বিট কর্মকর্তা মনজুর মুর্শেদের নেতৃত্বে বনবিভাগের লোকজন বাচ্চাসহ ৭টি হনুমান উদ্ধার করে। এ সময় শাপলাপুর বিট কর্মকর্তা নুরে আলম মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
দিনেশপুর বিট কর্মকর্তা মনজুর মুরশেদ বলেন, মহেশখালীর পাহাড় থেকে বিলুপ্ত প্রায় বন্যপ্রাণী পাচার করার খবরে বন বিভাগ পৃথক অভিযান চালিয়ে ৭টি হনুমান উদ্ধার করেছে। পাচারচক্রে কারা জড়িত তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা জানান, দেশের তিন প্রজাতির হনুমানের দেখা মেলে, যার মধ্যে একটি হল কালোমুখ হনুমানের। বুনো পরিবেশে এদের গড় আয়ু ১৮-৩০ বছর। সাধারণত জুলাই- অক্টোবর বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল এদের প্রজননকাল। স্ত্রী হনুমান ২০০ থেকে ২১২ দিন গর্ভধারণের পর সাধারণত ১/২টি বাচ্চা প্রসব করে। হনুমানের এই প্রজাতিটি গাছের কচিপাতা, শাকসবজি ও ফলমূল, ফুল খায়। তবে বসতবাড়ির কাছাকাছি বসবাস করায় মানুষের খাবারেও এরা অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে।
তিনি বলেন, বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন) ২০১২ অনুযায়ী হনুমানের এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত। তাই এটি হত্যা বা এর কোনো ক্ষতি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
পূর্বকোণ/হুবাইব/জেইউ/পারভেজ