ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ওলামাদের সাথে আমাদের থাকতে হবে, আলেমরা হল এ জাতির রাহাবার। আমাদের মধ্যে খেলাফত থাকবে, এর পরেও যদি আমরা একে অপরের হাত ধরতে পারি তবে আমরা সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে পারবো। আমি আগেও আলেমদের কাতারে ছিলাম এখনো আছি, আগামীতেও থাকবো।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাতে আল-জামিয়াতুল আহালিয়া দারুল উলুম মইনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার বার্ষিক দস্তারবন্দী সম্মেলন উপলক্ষে মাদ্রাসা মাঠে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন ধর্ম উপদেষ্টা।
তিনি আরও বলেন, বিগত সরকার সমস্ত সম্পত্তি লুট করে বিদেশে ঘর বানায়। বাংলাদেশের কোন আলেম দেশের টাকা লুট করে বিদেশে বাড়ি করে নাই। সমস্ত ব্যাংক শেষ করে দিয়েছে তারা। ব্যাংকে ১ লাখ টাকার চেক দিলে ব্যাংক দেয় ৫ হাজার টাকা। আমরা যখন তিন মাস আগে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমতা বুঝে নিয়েছি তখন সিন্দুকের তলা ফাটা। আলহামদুলিল্লাহ তিন মাসের ভিতর আমাদের রিজার্ভ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, সাথে রেমিট্যান্সও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বায়তুল মোকাররম মসজিদকে আমরা ১০০ কোটির টাকা খরচ করে আইকনিক মসজিদে রূপান্তর করব। এই খরচের টাকাটা আমাদের হাতে আছে। আমাদের সময় কম এই অল্প সময়ে আমরা কিছু কাজ করে যেতে চাই। আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো ইমাম মুয়াজ্জিনদের বেতন কাঠামো নির্ধারণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রফেসর, সহকারী প্রফেসর সহযোগী প্রফেসররা যে স্কেলে বেতন পায় মসজিদের ইমাম মুয়াজ্জিন ও খতিবরা সে স্কেলে বেতন পাবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের হাতে সময় কম, নির্বাচন কমিশনার গঠন করেছি। এরপর ভোটার তালিকা হালনাগাদ করব। হালনাগাদে ভোটার লিস্টে যারা নতুন ভোটার হয়েছে তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং মৃত ব্যক্তিরা বাদ যাবে। বহুদিন পর বাংলার মানুষ নিজের পছন্দমত নিজের ভোট নিজেই দিতে পারবে। যাকে পছন্দ তাকে ভোট দিতে পারবে। আপনার ভোট দেওয়া হয়ে গেছে সেই কথা আর কেউ বলতে পারবেন না। অবাধ নিরপেক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়ে যারা ক্ষমতায় আসবে আমরা তাদের হাতে ক্ষমতা বুঝিয়ে দিব। আমি বারবার বলি আমরা বেশি দিন থাকতে আসি নাই। যারা আসবে তাদের পদ সুগম করতে এসেছি।
মাদ্রাসার মহা-পরিচালক মুফতি খলিল আহমদ কাসেমী আল কুরাইশীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দস্তারবন্দী সম্মেলনে নসিহত পেশ করেন হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী, আল্লামা শেখ আহমদ, আল্লামা মুফতি আহমাদুল্লাহ, আল্লামা নূরুল ইসলাম ওলিপুরী, মুফতি কিফায়াতুল্লাহ, আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন, মাওলানা আবু তাহের নাদবী, মাওলানা সালাহ উদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা হাবীবুর রহমান কাসেমী, মাওলানা লোকমান হাকিম, মাওলানা ওসমান ফয়জী, মাওলানা আজিজুল হক আল মাদানী, মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফতেহপুরী, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, মাওলানা সা’দাত হোসাইন সাহেব, মাওলানা মুফতি নুরুল্লাহ সাহেব, মাওলানা কিফায়াতুল্লাহ আজহারী, আল্লামা আহমাদুল্লাহ প্রমুখ।
এছাড়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, সিটি মেয়র ডাক্তার শাহাদাত হোসেন ও বিএনপির বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দিন।
মাহফিল শেষে কয়েক হাজার তরুণ আলেমকে প্রতিষ্ঠানের নাম ও মনোগ্রাম খচিত বিশেষ সম্মানসূচক পাগড়ি প্রদান করা হয়।
পূর্বকোণ/খোরশেদ/জেইউ/পারভেজ