চট্টগ্রামের রাউজানের বাগোয়ান ইউনিয়নে দুর্বৃত্তরা এক শিক্ষক ও কোচিং সেন্টারের স্বত্ত্বাধিকারীকে হত্যাচেষ্টায় কুপিয়ে জখম করেছে। এ সময় কোচিং সেন্টারটি ভাঙচুর করা হয়েছে। ওই শিক্ষককে উদ্ধারকালে জনতা দুর্বৃত্তদের কয়েকজনকে গণপিটুনি দিয়েছে। এতে জনতার হাতে দুটি এবং দুর্বৃত্তদের হাতে আরো একটিসহ তিনটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুর হয়েছে। আহত শিক্ষককে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বুধবার (২০ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে গরিব উল্লাহ পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
গুরুতর আহত শিক্ষক হলেন- গশ্চি গরিব উল্লাহ পাড়ার আব্দুল মোতালেবের ছেলে শাকিল সরোয়ার (২৮)। এই ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এতে অভিযুক্তরা হলেন, একই এলাকার মুন্সি মিয়ার ছেলে মো. আরজু (৩০), মো. রবি (২৮), মো. লোকমান (৪০), মো. আরাফাত (২৭), মো. আকতার (২৫), আয়েশা বেগম (৪০) ও আনিকা আকতার (৩৫)। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জন রয়েছে।
আমিরাত প্রবাসী মো. মানিক বলেন, আমার বোন নাছিমা আকতারের স্বামী মো. আবছারের পরিবার দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়দের হাতে নির্যাতিত। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এর প্রতিবাদ করায় আমাকে এবং আমার ছোট ভাই শিক্ষক শাকিল সরোয়ারকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এর জের ধরে আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে ছোট ভাই শিক্ষক শাকিল সরোয়ার তার কর্মস্থল স্টুডেন্ট কেয়ার কোচিং সেন্টারে পৌঁছলে আমার আরেক ভাই রাশেদুল আলম খোকন হত্যার আসামি মো. লোকমান এবং আরজু, রবিসহ ১৮-২০ জন দুর্বৃত্ত সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে এসে শাকিলকে ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে, লাথি, ঘুষি দিয়ে মারাত্মক জখম করে। একপর্যায়ে তার চিৎকারে এলাকার বহু নারী-পুরুষ এগিয়ে এসে শাকিলকে উদ্ধার করে।
এ সময় জনতার হাতে পিটুনির শিকার হন রবি ও আরজু। অন্যান্যরা পালিয়ে যায়। জনতা দুর্বৃত্তদের বহনকারী দুটি অটোরিকশা ভাঙচুর করে। দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যাওয়ার সময় আমার বোনের জামাই মো. আবছারের অটোরিকশাও ভাঙচুর করে। ঘটনার পর আহত শাকিল সরোয়ারকে প্রথমে রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনায় আমরা থানায় অভিযুক্তদের নামে অভিযোগ দায়ের করেছি।
আহতের বড় ভাই প্রবাসী মো. মানিক বলেন, হামলাকারীদের মধ্যে মো. লোকমান ১১ বছর পূর্বে আমার ভাই রাশেদুল আলম খোকনকে পিটিয়ে হত্যায় জড়িত ছিল। এদিকে এঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
থানার সেকেন্ড অফিসার (ওসির বদলিজনিত অনুপস্থিতিতে অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) মো. আলমগীর বলেন, গরিব উল্লাহ পাড়ার হামলার ঘটনায় আক্রান্তরা থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। চুয়েট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মামুনকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। তিনি বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন।
পূর্বকোণ/জাহেদ/জেইউ/পারভেজ