চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

শান্তিপূর্ণ-উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গোৎসব পালনে মাঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

চকরিয়া সংবাদদাতা

৭ অক্টোবর, ২০২৪ | ১১:৪৭ অপরাহ্ণ

একদিন পরই শুরু হচ্ছে সনাতনী সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এই উৎসবকে ঘিরে চকরিয়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া পূজার বরাদ্দও প্রদান করা হয়েছে।

 

চকরিয়ায় প্রায় ৯০টি পূজামণ্ডপে শ্রী শ্রী দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এরমধ্যে ৪৭টি মণ্ডপে প্রতিমা পূজা ও ৪৩টি মন্ডপে ঘট পূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে মণ্ডপ কমিটির নেতৃবৃন্দ প্যান্ডেল তৈরির কাজও শেষ করে ফেলেছে। কিছু কিছু মণ্ডপে প্যান্ডেল তৈরির কাজ শেষ না হলেও আজকের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে বলে নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন।

এছাড়াও সোমবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গোৎসব যাতে সুষ্ঠু, সুন্দর, সুশৃঙ্খল এবং আনন্দগণ পরিবেশে শেষ হয় সেজন্য নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এজন্য মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ ও আনসার-ভিডিপির বাহিনীর সদস্যরা।

 

চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার চকরিয়ায় ৯০টি পূজামণ্ডপের জন্য সরকারিভাবে প্রায় সাড়ে ৪৩ টন চাউল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে প্রতিমা পূজার জন্য ৪০ হাজার ৪৫০ কেজি এবং ঘট পূজার জন্য ৩ হাজার ৫০ কেজি চাউল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

 

এসব চাউলের ডিও সোমবার সকালে প্রতিটা পূজামণ্ডপের সভাপতির অনুকূলে প্রদান করা হয়েছে। এসব চাউল বিক্রি করে ওই টাকা পূজার কাজে ব্যবহার করবে কমিটি।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অন্যান্য বছর চকরিয়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ সরকারি বরাদ্দের চাউল বিক্রি করে নগদ টাকা বণ্টন করতো মণ্ডপ কমিটির কাছে। তাই সরকারি বরাদ্দের চাউল বরাদ্দ নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতি হতো বলে অভিযোগ ছিলো। বরাদ্দ দেয়ার পরও প্রত্যেক কমিটি থেকে ১ হাজার টাকা কেটে নেয়া হতেও বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বছর উপজেলা প্রশাসন সরাসরি বরাদ্দ দেয়ায় এই টাকাও দিতে হয়নি।

 

কিন্তু এই বছর সরকারি বরাদ্দের চাউলগুলো প্রতিটি পূজামণ্ডপের সভাপতির অনুকুলে বরাদ্দ দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এর ফলে বরাদ্দও বেশি পেয়েছে। সরকারি বরাদ্দের এসব চাউল বিভিন্ন টিকাদারের কাছে বিক্রি করে ভালো অংকের টাকা পেয়েছে মণ্ডপ কমিটির নেতৃবৃন্দ। সরকারি বরাদ্দ সঠিকভাবে পাওয়ায় মণ্ডপ কমিটির নেতৃবৃন্দ বেশ খুশি।

 

ফাঁসিয়াখালী রুদ্রপল্লী হরি মন্দির উদযাপন পরিষদের সভাপতি নয়ন রুদ্র বলেন, আমরা ইতোমধ্যে মণ্ডপের কাজ শেষ করে ফেলেছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নিরাপত্তা নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন। প্রতিদিন টহলে আসছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

 

চকরিয়া সার্বজনীন কেন্দ্রীয় মন্দির দুর্গাপূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রিপন বসাক জানান, এ বছর উপজেলা প্রশাসন সরকারি বরাদ্দ সরাসরি মণ্ডপ কমিটির কাছে প্রদান করেছে। এ কারণে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি করতে পেরেছি। যার কারণে টাকাও বেশি পেয়েছি। এজন্য আমরা বেশ খুশি।

 

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনজুরুল কাদের ভূঁইয়া বলেন, সনাতনী সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। এই উৎসব যাতে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও আনন্দগণ পরিবেশে উদযাপিত হয় সেজন্য কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে।

 

তিনি আরও বলেন, ৪৭টা পূজামণ্ডপের অনুকূলে প্রায় পুলিশের ১৬টি মোবাইল টিম কাজ করবে। প্রতি মণ্ডপে পুলিশ ছাড়াও সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও আনসার বাহিনী কাজ করবে। আশা করি সবার সহেযাগিতায় আমরা শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করতে পারব দুর্গোৎসব।

 

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, সনাতনী সম্প্রদায়ের এই উৎসব যাতে সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে পারি সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আমি ইতোমধ্যে বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেছি। কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কথা বলেছি। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা হয়েছে।

 

তিনি আরও বলেন, সোমবার সকালে সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া বরাদ্দ প্রতিটা মণ্ডপ কমিটির সভাপতির অনুকূলে ডিও প্রদান করা হয়েছে। তারা এসব ডিও’র চাউল পূজার কাজে ব্যবহার করবে। আশা করি সবার সহযোগিতায় সুষ্ঠুভাবে সর্ম্পন্ন করতে পারব দুর্গোৎসব।

 

 

পূর্বকোণ/জাহেদ/জেইউ/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট