কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা সাদ্দাম হোসেন। তার আর আদালতে যাওয়া হলো না। দরকার নেই জামিনের। ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আর স্ট্যাটাসও দিতে পারবেন না তিনি। একেবারেই ইহজগৎ ত্যাগ করে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার মৃত্যুর পর চকরিয়াজুড়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। দীর্ঘদিন লিভার ক্যান্সারে ভোগে পরপারে পাড়ি জমান তিনি। গত ৮ সেপ্টেম্বর চকরিয়া পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র চাঁদাবাজি হত্যাচেষ্টা লুটপাটসহ বিভিন্ন অভিযোগে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৩৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ২০-৩০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলমকে প্রধান অভিযুক্ত করে দায়ের করা মামলায় ৩০ নম্বর আসামি দেখানো হয় সাদ্দাম হোসেনকে। যেদিন নালিশি মামলাটি দায়ের হয় ওইদিনই তার সাদ্দাম হোসেন নিরব নামীয় আইডি থেকে একটি স্ট্যাটাস দেয়া হয়। এতে সাবেক মেয়র ও বর্তমান পৌর বিএনপির সভাপতি নুরুল ইসলাম হায়দারকে খালার জামাই দাবি উল্লেখ করে লিখেন, ‘আপনি শান্তি পেলেন তো! আপনি যে ঘটনা দেখিয়ে আমার মতো নিরীহ ছোটখাটো অনেক কর্মীকে নিয়ে মামলা দিলেন। অথচ আপনি ও আপনার সম্মন্ধি আলমগীর চৌধুরীকে আসামি করলেন না। অথচ তার সাথেই ছিলো দ্বন্দ্ব ও হাঙ্গামা। ওইসময় মামা আলমগীর চৌধুরী একটি মামলায় আমাকে আসামি করলো আজকে আপনিও করলেন। তাহলে কি আমরা আপনাদের দু’জনকে পিটিয়ে মেয়র হতে চেয়েছিলাম? বাহ! চমৎকার, অসাধারণ। অথচ ২০১৫ সাল থেকে আমি লিভারের রোগ নিয়ে যুদ্ধ করতে করতে ২০২২ সালে এসে মরণব্যাধি রোগ লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হই। এই রোগ নিয়ে এই হাসপাতাল থেকে ওই হাসাপাতালে, এই দেশ থেকে ওই দেশে দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে আজ আমার সময় পুরিয়ে এসেছে। চট্টগ্রাম পপুলার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ডাক্তার এম এ আউয়ালের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছি। বাঁচবো কিনা জানি না। তবে এই অসুস্থ শরীর নিয়ে আপনাদের জন্য মন থেকে দোয়া করি। মহান আল্লাহ যেনো আপনাদের হেদায়েত দান করেন। কারণ মৃত্যু পদযাত্রীর দোয়া নাকি কবুল হয়, যদি মহান আল্লাহ এখান থেকে বেঁচে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যায় তাহলে আপনার বাসায় আসবো হায়দার আঙ্কেল। তখন আপনি আমাকে মেরে পুলিশে দিয়েন। নাহয় একটা কোপ দিয়ে মেরে ফেলিয়েন। কারণ এখন যে যন্ত্রণায় আছি তাঁর থেকে অন্তত মুক্তি পাবো। সবাই আমার জন্য দোয়া করিয়েন। এই যন্ত্রণা যে আর সহ্য করতে পারতেছি না।’
এই স্ট্যাটাসের ২৬ দিন পর সাদ্দাম আর জাগতিক দুনিয়ায় নেই। বেঁচে ফিরবেন না আর বাড়িতে। সাবেক মেয়র হায়দারের বাড়িতেও আর যাওয়া হবে না। এমন মৃত্যুতে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে চকরিয়া পৌরশহরের প্রায় সকল স্থানে যেখানেই মানুষ জড়ো হচ্ছে সেখানেই আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে।
পূর্বকোণ/জাহেদ/জেইউ/এএইচ