চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

পাহাড় নিধনে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ছত্রছায়ায় সিন্ডিকেটের দাপট

নিজস্ব সংবাদদাতা

২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ১২:৫৮ অপরাহ্ণ

কক্সবাজারের ঈদগাঁহ উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের পাহাড় নিধন ও বালি সিন্ডিকেটকে অবৈধ সুবিধা দিতে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের যোগসাজসের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। পাহাড়গুলো দিন দিন মৃত্যুর মুখে। অবৈধ ভূমি খননকারীরা নির্বিচারে এই পাহাড়গুলো কেটে চুরমার করছে। পাহাড়কে প্রকৃতির মেরুদণ্ড বলা হয়। এই পাহাড়গুলোই প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করে। কিন্তু অর্থলোভী কয়েকজনের কারণে এই প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিপন্ন হচ্ছে।

 

 

কক্সবাজারের ঈদগাহ উপজেলার ফুলছড়ি রেঞ্জে স্থানীয় নুরুল হক সিন্ডিকেটের জিম্মি হয়ে পড়েছে পাহাড়ে বসবাসরত সাধারণ মানুষ। সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তারা পাহাড় নিধন থেকে শুরু করে নিজেদের বাড়িঘর নির্মাণ পর্যন্ত নুরুল হক সিন্ডিকেটকে মোটা অংকের টাকা দিতে বাধ্য। না দিলে বন বিভাগের হুমকি দেখিয়ে মামলায় জড়ানোর হুমকি দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাড়ি নির্মাণ করতে গেলে ৪৫ হাজার টাকা এবং ছাদের কাজ করতে গেলে আরও অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। এই টাকা না দিতে পারলে বন বিভাগের হুমকি দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে অনেকেই পলিথিন দিয়ে বাড়ি ঢেকে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। কক্সবাজারের ঈদগাহ উপজেলার ফুলছড়ি রেঞ্জে স্থানীয় ভূমিদস্যু নুরুল হক সিন্ডিকেটের সঙ্গে যোগসাজস করে স্থানীয় বাসিন্দাদের ওপর অত্যাচার চালানোর অভিযোগ উঠেছে রেঞ্জ কর্মকর্তা হুমায়ুন আহমেদের বিরুদ্ধে।

 

 

স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, নুরুল হক সিন্ডিকেটের সহযোগিতায় রেঞ্জ কর্মকর্তা তাদের জমিতে বাড়ি নির্মাণে বাধা দিচ্ছেন এবং অর্থ আদায় করছেন। এই অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য রেঞ্জ কর্মকর্তা হুমায়ুন আহমেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, অনেক নুরুল হক আছে এবং তিনি সব নুরুল হককে চিনেন না। তবে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে সেই নুরুল হকের সাথে তার কোন পরিচয় নেই। তিনি আরও দাবি করেছেন যে, অনেকেই সুবিধা নেওয়ার জন্য তার নাম ভাঙিয়ে টাকা আদায় করতে পারে। তিনি এই ধরনের কাজের বিরোধী এবং পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে সবসময় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করেন।

 

 

কক্সবাজারের ঈদগাহ উপজেলার ফুলছড়ি রেঞ্জে স্থানীয় ভূমিদস্যু নামে পরিচিত নুরুল হকের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলোকে তিনি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে একদল লোক ষড়যন্ত্র করছে এবং তাকে হেয় করার চেষ্টা করছে। নুরুল হক দাবি করেন, তিনি ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা হুমায়ুন আহমেদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখেন। তিনি বলেন, তিনি নিজে একটি গাড়ি চালান এবং রেঞ্জ কর্মকর্তার বিভিন্ন কাজে সহায়তা করেন। তিনি দীর্ঘদিন বিদেশে থেকে দেশে ফিরেছেন এবং এখন এই অঞ্চলেই ব্যবসা করেন। তিনি কাউকে হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করেন না।

 

 

কক্সবাজারের ঈদগাহ উপজেলার ফুলছড়ি রেঞ্জে স্থানীয় ভূমিদস্যু নামে পরিচিত নুরুল হকের বিরুদ্ধে উঠে আসা অভিযোগের জবাবে তিনি দাবি করেছেন, তিনি ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা হুমায়ুন আহমেদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখেন। একজন রেজিস্টার্ড ভিলেজার হিসেবে তিনি রেঞ্জ কর্মকর্তাকে বিভিন্ন কাজে সহায়তা করেন এবং এজন্য রাতদিন তাকে দেখা হয়। কক্সবাজারের ফুলছড়ি রেঞ্জে দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন সরকার জানিয়েছেন, তিনি এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাননি।

 

পূর্বকোণ/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট