দেশের ফেনী, কুমিল্লা, খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীসহ বিভিন্ন জেলায় বন্যা কবলিতদের পাশে দাঁড়াতে ত্রাণ সংগ্রহ করছে রোহিঙ্গারা। উখিয়ার কুতুপালং, পালংখালী, বালুখালীসহ বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা মাঝিদের (নেতা) নেতৃত্বে নগদ টাকা ও চাল সংগ্রহের পর ক্যাম্প সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে তুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
রোহিঙ্গারা জানান, কোনো সংগঠনের পক্ষে বা নেতৃত্বে নয়, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝি (নেতা) এবং বিভিন্ন মাদ্রাসার মুহতামিমসহ সাধারণ রোহিঙ্গাদের যৌথ উদ্যোগে এসব ত্রাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে। ঘরে ঘরে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশিদের জন্য ত্রাণ সংগ্রহ করছেন তারা। সাধারণ রোহিঙ্গারা কেউ টাকা, কেউ চাল দিয়ে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।
ত্রাণ সংগ্রহে কাজ করা রোহিঙ্গা যুবক ওসমা ইব্রাহিম বলেন, আমরা যখন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিই, তখন বাংলাদেশের মানুষ আমাদের আশ্রয় দিয়েছে। এখন বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা দেখা দিয়েছে। মানুষ বিপদে পড়েছে। তাই আমাদের ভাইদের জন্য আমরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি। বিভিন্ন ক্যাম্পের হেড মাঝিদের নেতৃত্বে তাদের অধস্তন মাঝিরা নগদ টাকা ও চাল সংগ্রহ করে জমা করছেন। পরে মুরব্বিদের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে সংগৃহীত এসব ত্রাণ ও নগদ টাকা তুলে দেওয়া হবে।
বি ব্লকের হেড মাঝি আবু হাসিম বলেন, ২৬ তারিখ থেকে আমরা ত্রাণ সংগ্রহ শুরু করেছি। এখন প্রায় ৫০ বস্তা চাল আমার ব্লক থেকে এসেছে। ইনশাআল্লাহ আরও আসবে।
মারকাযুল মাআরিফ মাদ্রাসার পরিচালক মওলানা ইলিয়াস বলেন, আমরা ২০১৭ সালের কথা ভুলতে পারি না। এর আগেও রোহিঙ্গারা যখন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তখন বাংলাদেশের মানুষ আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। দলমত নির্বিশেষে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এখন বাংলাদেশের মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্যার কবলে পড়েছে। তাই আমাদের ত্রাণ থেকে আমরা যতটুকু পারি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাদ্রাসা বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহুর পরিচালক মাওলানা রহমত করিম বলেন, রোহিঙ্গাদের আয়ের কোনো উৎস নেই। রোহিঙ্গারা আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার সহযোগিতায় বেঁচে আছে। আমরা নিজেদের ত্রাণ থেকে যতটুকু পারি বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি।
পূর্বকোণ/মানিক/জেইউ/পারভেজ