বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও মাদক চোরাকারবারিদের মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে। এ সময় নেজাম উদ্দীন নামে এক ডাকাত নিহত হয়।
সোমবার (৩ জুন) ভোর ৫টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়নের ভানুখাইয়া বিওপির আওতাধীন গর্জনিয়ার মরিচ্যাচা নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম।
তিনি জানান, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে বিজিবির মাদক ও চোরাচালান বিরোধী টহলদলের ওপর নিজাম ডাকাত চোরাকারবারি সিন্ডিকেট গুলিবর্ষণ ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে। আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও পাল্টা গুলি ছুড়ে। এ সময় ইয়াবা ও বার্মিজ সিগারেট উদ্ধার করা হয়।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র পক্ষ থেকে জানানো হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ইয়াবা ও সিগারেট আটক অভিযানে নেমে ৯৮ কার্টুন বার্মিজ সিগারেট এবং ২০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করতে সক্ষম হয় বিজিবি। মাদক এবং সিগারেট আটকের খবর পেয়ে ১৫০-২০০ জন চোরাকারবারি নিজাম ডাকাতের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ হয়ে বিজিবি টহল দলের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। প্রায় ৫০-৬০ রাউন্ড গুলি করতে করতে অগ্রসর হয় তারা। আত্মরক্ষার্থে বিজিবি টহল দল পাল্টা ফায়ার করে। এ সময় ডাকাত এবং দুষ্কৃতকারীরা পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে বিজিবির ৪টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনায় নেজাম উদ্দীন নামের এক চোরাকারবারি নিহত হয়েছে বলে জানা যায়।
তবে এ ঘটনায় একজন আহতের কথা উল্লেখ করলেও নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি বিজিবি। নিহত ব্যক্তির নাম নেজাম উদ্দীন। তার বাড়ি কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নে। নিহতের বিষয়টি খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
নিহত নেজাম উদ্দীনের পিতা বশির আহমদ বলেন, আমার ছেলে পরশুদিন বেড়াতে যায় নাইক্ষ্যংছড়ি। গতকাল রাতেও কথা হয়েছে তার সঙ্গে। আজকে সকালে চলে আসবে বলেছে। পরে শুনি বিজিবির সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছে। আজকে সকালে তার মরদেহ এসেছে।
এদিকে- রামু সংবাদদাতা বলেন, কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকিবুজ্জামান জানান যে সোমবার সকালে নেজামের গুলিবিদ্ধ মরদেহ বাড়িতে আনা হয়। খবর পেয়ে দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) ইমন কান্তি চৌধুরী জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে- নেজাম উদ্দীন কক্সবাজার শহরের শীর্ষ ডাকাত বশর বাহিনীর প্রধান রোহিঙ্গা বশরের ছেলে। একসময় বশর বাহিনীর রাজত্ব ছিল পুরো পাহাড়তলী এলাকায়। এরপর কৌশলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আত্মগোপনে চলে যায় ডাকাত বশর। এর মধ্যে তার দলের কয়েকজন কক্সবাজার শহরে সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করে। কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়া এলাকার আলোচিত কলেজ ছাত্র তানভির হত্যা মামলার এক নাম্বার আসামি ডাকাত বশরের ছেলে নেজাম উদ্দীন। এই হত্যাকাণ্ডের পর খুরুশকুল ও নাইক্ষ্যংছড়িতে আত্মগোপনে থাকে নেজাম উদ্দীন। পরে নাইক্ষ্যছড়িংতে যোগদেন আলোচিত ডাকাত শাহিন বাহিনীর প্রধান শাহিনের দলে। পাহাড়ি এলাকায় অবস্থান নিয়ে সীমান্ত পথে চোরাচালানের কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে নেজাম।
পূর্বকোণ/এরফান/জেইউ/পারভেজ