চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

কাল আত্মসমর্পণ করছে মহেশখালীসহ উপকূলের অর্ধশতাধিক জলদস্যু

মহেশখালী সংবাদদাতা

২৯ মে, ২০২৪ | ১০:৩৮ অপরাহ্ণ

সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে চতুর্থবারের মতো চট্টগ্রামে নিজেদের অস্ত্র জমা দেওয়ার মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছে কক্সবাজারের মহেশখালীসহ চট্টগ্রাম উপকূলের অস্ত্র তৈরির কারিগরসহ অর্ধশতাধিক জলদস্যু।

 

রাত পোহালেই আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৩০ মে) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ছেড়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে তারা।

 

র‍্যাব জানান, চট্টগ্রাম র‍্যাব-৭ এর সদর দপ্তরের মাঠে বৃহস্পতিবার সকালে জলদস্যুদের এ আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। একটি বেসরকারি টেলিভিশন সাংবাদিকের মধ্যস্থতায় এসব জলদস্যু আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কাছে আত্মসমপর্ণ করতে সম্মত হয়েছে বলে জানা গেছে।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজারের সবচেয়ে বেশি অপরাধপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ও বড় মহেশখালী ইউনিয়ন। এলাকায় প্রায়ই খুন, লুটপাট, দস্যুতা, অপহরণসহ বিভিন্ন অপকর্ম ঘটে থাকে।

 

এর আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মহেশখালীর ওইসব দুর্গম এলাকায় অসংখ্যবার অভিযান চালিয়ে অস্ত্র তৈরির কারাখানা আবিষ্কারসহ জলদস্যুদের গ্রেপ্তার করেছে। এবারও মহেশখালী এবং চট্টগ্রাম উপকূলে দাবিয়ে বেড়ানো বাকি জলদস্যু সন্ত্রাসীরা নিজেরাই এসব অপকর্ম ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চাচ্ছে।

 

মধ্যস্থতাকারী এম এম আকরাম হোসাইন জানান, মহেশখালীসহ চট্টগ্রাম উপকূলীয় অঞ্চলের চিহ্নিত অস্ত্রের কারিগর ও কুখ্যাত বেশ কয়েকটি জলদস্যু বাহিনীর সর্দার ও সদস্যরা আগামীকাল বৃহস্পতিবার সদলবলে আত্মসমর্পণ করবে।

 

আত্মসমর্পণকারীদের সংখ্যা আপাতত ৫০ জনের মতো হলেও এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ আত্মসমর্পণে আগ্রহী অনেক জলদস্যু ও অস্ত্রের কারিগর আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণের অপেক্ষায় ছিল।

 

প্রশাসন সূত্র জানায়, আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, কয়েকজন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী, র‍্যাবের মহাপরিচালক খুরশিদ হোসেন, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) নুরে আলম মিনা, স্থানীয় সংসদ সদস্য, কোস্টগার্ডের প্রতিনিধিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যোগ দেবেন।

 

উল্লেখ্য, এর আগে র‌্যাবের কঠোর পদক্ষেপের ফলে ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর মহেশখালী আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার অঞ্চলের ৪৩ জন জলদস্যু আত্মসমর্পণ করেছে।

 

অপরদিকে পুলিশের অভিযানে টিকতে না পেরে ২০১৯ সালে মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ৯৬ জন জলদস্যু ও অস্ত্র কারিগর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের আইজিপির উপস্থিতিতে আত্মসমর্পণ করে।

 

২০২০ সালে চট্টগ্রামের বাঁশখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে বিভিন্ন দুর্ধর্ষ বাহিনীর ৩৪ জন জলদস্যু অস্ত্র গুলি জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করে। এরপর থেকে এ অঞ্চলে জলদস্যুতার ঘটনা অনেকাংশেই কমে গেছে।

 

 

পূর্বকোণ/হুবাইব/জেইউ/পারভেজ

শেয়ার করুন