একই প্রতিষ্ঠানে সহকারী ও প্রধান হিসেবে টানা ২১ বছর ১মাস চাকরি করে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের হৃদয় জয় করে নিয়েছিলেন খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার মরাডলু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবি মোহন চাকমা।
মঙ্গলবার ছিল তাঁর শেষ কর্ম দিবস। ফলে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে জমকালো আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় অবসরজনিত বিদায় অনুষ্ঠান।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি রকেট কুমার দেব’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিদায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তপন কুমার চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নূরজাহান আফরিন লাকি, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুল ইসলাম, ইউপি সদস্য অংগ্যজাই মারমা, মো. আবুল হাসেম, সাবেক ইউপি সদস্য মো. সুরুজ মিয়া, শিক্ষক সমিতির নেতা ও প্রধান শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলাম, মো. বেলাল হোসেন, ধীমান চন্দ্র শীল, মো. মনির হোসেন, অভিভাবক সদস্য মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন, একজন শিক্ষক টানা ২১ বছর একটি জনপদে আলো ছড়িয়েছেন! আজ তাঁর প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে, কেউ নিশ্চয়ই কোন ভালো কর্মে পরিবার বা সমাজে আলো ছড়াচ্ছে। আজকের বিদায় মুহূর্তে গ্রামের সকল সম্প্রদায়ের শিশু, কিশোর, বয়োজ্যেষ্ঠদের উপস্থিতি ও চোখের জল দেখেই বিদায়ী শিক্ষকের সৎ কর্ম, সততা এবং একনিষ্ঠতা প্রমাণ হয় তিনি নিঃসন্দেহে ভালো মনের একজন মানুষ গড়ার কারিগর ছিলেন।
এছাড়া বিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান অভিভাবকেরা এক বাক্যে বিদায়ী শিক্ষকের দীর্ঘ কর্মজীবনের পরশমাখা স্পর্শের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
বিদায়ী শিক্ষক রবি মোহন চাকমা তাঁর বিদায়ী বক্তব্যে অনুন্নত জনপদে টানা ২১ বছর শিক্ষকতায় সকলের সহযোগিতাসহ সকল শিক্ষার্থীদের মঙ্গলময় জীবনে সুখ,শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন অশ্রুসিক্ত নয়নে ভূল-ত্রুটির জন্য ক্ষমা চেয়ে প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের জন্য আশির্বাদ কামনা করেন। এসময় উপস্থিত শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও ধর্ম, বর্ণ নারী,পুরুষের চোখের জলে অনুষ্ঠান স্থলের শুনশান নীরবতা নেমে আসে। পরে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে এবং মোটরসাইকেল শোভাযাত্রায় বিদায়ী শিক্ষক রবি মোহন চাকমাকে বাড়ি পৌঁছে দেন।
পূর্বকোণ/রবিউল/জেইউ/পারভেজ