চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কালবৈশাখীর তাণ্ডবে শতাধিক গাছপালা ভেঙে পড়েছে। উড়ে গেছে বহু কাঁচাঘরের চালসহ বিভিন্ন অংশ। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লাইন দীর্ঘ এক ঘণ্টারও বেশি সময় বন্ধ থাকে। পাশাপাশি বাড়বকুণ্ডে বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে পুরো এলাকা। এছাড়া বজ্রপাতে বেশ কিছু ইলেক্ট্রনিক্স সরঞ্জাম নষ্ট হবার খবর পাওয়া গেলেও কোন প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ সোমবার বিকাল আনুমানিক ৩টার দিকে সীতাকুণ্ডে হঠাৎ বজ্রপাতসহ প্রবল ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। এতে উপজেলার সৈয়দপুর থেকে সলিমপুর এলাকায় শতাধিক গাছপালা ভেঙে পড়ে। উড়ে যায় বহু কাঁচাঘরের চালসহ স্থাপনা। এদিকে এসব গাছপালার কিছু মহাসড়কের নুনাছড়া এলাকায় ভেঙে পড়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লাইন দীর্ঘ এক ঘণ্টারও বেশি সময় অচল হয়ে পড়ে। বজ্রপাতে বেশ কিছু ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জাম নষ্ট হয় বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছে।
উপজেলার সৈয়দপুরের বাসিন্দা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, ঝড়ের সময় মহাসড়কে একাধিক বড় গাছ ভেঙে পড়ায় নুনাছড়া এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে চট্টগ্রামমুখী সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি এবং প্রায় ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গাছগুলো কেটে সরালে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
উপজেলার বাড়বকুণ্ড হাতিলোটার বাসিন্দা সবুজ শর্মা জানান, বৃষ্টির সাথে প্রবল ঝড়ো হাওয়া বইতে থাকলে হাতিলোটা গ্রামের বেশ কয়েকজনের ঘরের চালা ও দুর্বল স্থাপনা ভেঙে পড়ে। ফলে বৃষ্টিতে দুর্ভোগ নেমে আসে এসব পরিবারে। তার নিজের ঘরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।
উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য গাছপালা ভেঙে পড়ে দুর্ভোগের সৃষ্টি হলেও কোথাও প্রাণহানির মতো ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি বলে জানান সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে.এম রফিকুল ইসলাম। তবে গাছপালা ভেঙে পড়ায় বহু এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে বলে জানান।
সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার নুরুল আলম দুলাল বলেন, মহাসড়কে গাছ ভেঙে পড়ে যান চলাচল অল্প সময় বন্ধ থাকলেও আমাদের কর্মীরা দক্ষতার সাথে দ্রুততম সময়ে গাছগুলো সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন বলেন, হঠাৎ প্রবল ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে এখানে। তবে কোন প্রাণহানির মতো ঘটনার খবর পাইনি।
এদিকে ওয়াপদা বাড়বকুণ্ড অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রেয়াজুল হক জানান, বাড়বকুণ্ড এলাকায় একটি বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে যাওয়ায় পুরো এলাকা বর্তমানে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে। অল্প সময়ের মধ্যে সেটি পুনরায় স্থাপনের জন্য চেষ্টা চলছে। এটি স্থাপন করে সংযোগ দেয়ার পর অন্য কোন এলাকায় বিদ্যুৎ কি কারণে নেই তা খতিয়ে দেখা হবে।
পূর্বকোণ/সৌমিত্র/জেইউ/পারভেজ