দীর্ঘ ২০ বছর পর আবারও ডেলিভারি শুরু হলো সীতাকুন্ডের মুরাদপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে। গত শুক্রবার গভীর রাতে কেন্দ্রটিতে ডেলিভারির মাধ্যমে মা হন এক প্রসূতি। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় কেন্দ্রটিতে সুদীর্ঘকাল পর আবারও ডেলিভারি শুরু হওয়ায় হাতের কাছে দ্রুত সেবা পাবার ব্যাপারে আশাবাদি স্থানীয়রা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ ২০০৪ সালে এ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে এক মা সন্তান প্রসব করেন। কিন্তু এরপর এখানে জনবল সংকটে আশানুরূপ সেবা না পাওয়ায় এই কেন্দ্র থেকে মাত্র পাঁচ মিনিটের দূরত্বে থাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলে যেতেন সেবাগ্রহীতারা।
একটি কেন্দ্রে কোনরকম প্রসব কার্যক্রম না থাকায় বিষয়টি ভাবিয়ে তোলে এ উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা অফিসার জিয়াউল কাদেরকে। তিনি ধীরে ধীরে কেন্দ্রটিতে সার্বিক সাপোর্ট কিছুটা বৃদ্ধি করে সর্বশেষ মিটিংয়ে এখানকার কর্মকর্তা ও কর্মীদের দিকনির্দেশনা দেন। সন্তানসম্ভবা প্রতিটি মায়ের কাছে গিয়ে তাদের বোঝানো ও হাতের কাছেই সব সেবা পাওয়ার আশ্বাস দেয়ার কথা বলেন তিনি। জিয়াউল কাদেরের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কর্মীরাও তা বাস্তবায়ন করার পরই শুক্রবার রাতে এক প্রসূতিকে নিয়ে অভিভাবকরা এই কেন্দ্রে চলে আসেন।
মুরাদপুর ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক মো. নুর হাসান জানান, এই মাসের মাসিক সমন্বয় সভা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার জিয়াউল কাদেরের সিদ্ধান্তে মুরাদপুর এই কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। তিনি আমাদের নির্দেশ দেন যতজন এ মাসের প্রত্যাশিত ডেলিভারি রোগী রয়েছে তাদের প্রত্যেকের ঘরে সকল পরিবার কল্যাণ সহকারীকে নিয়ে একসাথে যাওয়ার জন্য। আমরা সে অনুযায়ী কাজ করায় শুক্রবার রাতেই আমরা একজন মাকে ডেলেভারি করানোর সুযোগ পাই।
মুরাদপুর ইউনিয়নের পূর্ব ভাটেরখিল গ্রামের আশরাফ ও তানজিনা আক্তার দম্পতির কোলজুড়ে স্বাভাবিক ডেলিভারির মাধ্যমে আসে কন্যাশিশু। বিনামূল্যে তারা সেবা পেয়ে খুবই খুশি। সর্বশেষ ২০০৪ সালে এখানে প্রসব কার্যক্রম হয় বলে সবচেয়ে বয়স্ক পরিবার কল্যাণ সহকারী লক্ষী রাণী দাশ জানান।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার জিয়াউল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার শূন্যে নামিয়ে আনার জন্য আমাদের উপপরিচালক মোহাম্মদ আবুল কালাম প্রতিনিয়ত বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন। সে নির্দেশনা মেনে প্রতিটি পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে যেন ডেলিভারি কার্যক্রম জোরালো হয় সে চেষ্টা করেছি আমি।
ইতোমধ্যে বাড়বকুন্ড, বারৈয়াঢালা, সলিমপুরে ডেলিভারি করানোর পর সর্বশেষ মুরাদপুরেও দীর্ঘ ২০ বছর পর ডেলিভারি করিয়েছি আমরা। এতে সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন পরিবার কল্যাণ সহকারী লক্ষী রাণী দাশ, লায়লা আরজুমান আরা ও লুৎফুর নাহার প্রমুখ। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে এলাকাবাসীকে সব সেবা দিতে সবার সহযোগিতা চান তিনি।
পূর্বকোণ/এসএ