চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

ঈদ-উৎসবকে কেন্দ্র করে সরগরম ভোটের মাঠ

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

৯ এপ্রিল, ২০২৪ | ১:২৭ অপরাহ্ণ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর পরই শুরু হয় উপজেলা নির্বাচনী হাওয়া। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সরগরম হয়ে উঠেছে ভোটের রাজনীতি। রোজা ও ঈদকে ঘিরে রীতিমতো ভোটের মাঠে নেমে পড়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। নেতা-কর্মীদের নিয়ে ইফতার মাহফিল ও ঈদবস্ত্র বিতরণের আড়ালে নিজেদের প্রার্থিতা জানান দিচ্ছেন প্রার্থীরা।

 

এবার চার ধাপে ৪৮১ উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যেই প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রথম ধাপে ১৫২ উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৮ মে। দ্বিতীয় ধাপে ১৬১ উপজেলায় ভোট হবে ২১ মে। প্রথম ধাপে উত্তর জেলার মিরসরাই, সীতাকু- ও সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় ধাপে জেলার রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, হাটহাজারী ও ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাচন। তৃতীয় ধাপে ২৯ মে এবং শেষ ধাপে ৫ জুন নির্বাচন হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইসি।

 

তফসিল ঘোষণার পর উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে সরগরম হয়ে উঠেছে আওয়ামী লীগের রাজনীতি। সম্ভাব্য প্রার্থীরা এলাকায় এলাকায় দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ঘন ঘন ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে রাজনীতি চাঙা করেছে।

 

এসব সভায় নিজের প্রার্থিতা জানান দিয়ে নেতাকর্মীদের সমর্থন ও দোয়া চেয়েছেন তারা। চট্টগ্রামের উত্তরের সাত উপজেলায় নির্বাচনী তপসিল ঘোষণা করা হয়েছে। এসব উপজেলায় ভোটের হাওয়া লেগে গেছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইতিমধ্যেই ভোটের মাঠে নেমে পড়েছে। বাদ যাচ্ছে না দক্ষিণের উপজেলার সম্ভাব্য প্রার্থীরাও।

এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয়ভাবে নৌকা প্রতীক না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। গত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী (নৌকা প্রতীক) ও দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ঘিরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন উপজেলায় দ্বন্দ্ব-সংঘাত সহিংসতায় রূপ নেয়। এবার কৌশলে দলীয় প্রতীক না দেওয়ার ঘোষণা দেয় ক্ষমতাসীন দল। মূলত ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর লক্ষ্যে এই কৌশল নেয় আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে প্রার্থী সংখ্যা বাড়লে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে বলে জানান দলীয় নেতাকর্মীরা।

 

দেখা যায়, বোয়ালখালী উপজেলায় সম্ভাব্য প্রার্থী মাসজুড়ে ছোট ছোট সভা ও ইফতার মাহফিল করে নিজেদের মতো ঘর গোছানোর প্রস্তুতি নেয় প্রার্থীরা। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল আমিন চৌধুরী, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজা, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক পরিচালনা পরিষদ নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মো. জাহেদুল হক মাসজুড়ে মাঠে পড়ে রয়েছেন। এছাড়াও বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম সেলিম, পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল আলম ও গাউসিয়া কমিটির মোহাম্মদ শফি ইফতার মাহফিল ঘিরে মাঠে রয়েছেন।

 

বোয়ালখালী ছাড়াও দক্ষিণের পটিয়া, বাঁশখালী, সাতকানিয়া, আনোয়ারা, কর্ণফুলী, চন্দনাইশ উপজেলার সম্ভাব্য প্রার্থীরা ঈদকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন। এ কারণে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ছুটেছেন নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায়। ফলে বিভিন্ন উপজেলায় ঈদকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নির্বাচনী আবহ।

 

সরেজমিন দেখা যায়, আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা পাড়া-মহল্লা, হাটবাজার ও রাস্তাঘাটে ঈদ শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি উপজেলা নির্বাচনে দোয়া ও সমর্থন চেয়ে ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন সাঁটিয়েছেন। সাধারণ মানুষকে কাছে টানতে চলছে সভা-সমাবেশ, কর্মীসভা ও ঘরোয়া বৈঠক করে চলেছেন। অনেকেই রোজায় ইফতার সামগ্রী ও ঈদবস্ত্র এবং দান-খয়রাত করে চলেছেন। অনেকে ঈদের দিন ও পরের দিনগুলোতে বাড়িতে নেতাকর্মীদের জন্য বড় আকারের ভূরিভোজসহ আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেছেন।

 

আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে সংশোধিত নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা অনুযায়ী, নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে কোনও সমর্থনসূচক তালিকা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। প্রচারণার সময়ও বেশি পাচ্ছেন প্রার্থীরা। তবে জামানতের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। নতুন বিধিমালায়, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে ১ লাখ টাকা জামানত দিতে হবে। ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামানত দিতে হবে ৭৫ হাজার টাকা।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন