মহেশখালীর কালারমারছড়া-মাতারবাড়ি ঘেঁষেই কোহেলিয়া নদী। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কবলে পড়ে নদীটি প্রাণহীন হয়ে পড়েছে। তবে এবার এই নদীর প্রতি চোখ পড়েছে ভূমিদস্যুদের। ইতিমধ্যে প্যারাবন কেটে ঘের নির্মাণের কাজ করছে অনেকেই।
জানা গেছে, উপজেলার মাতারবাড়ি দক্ষিণ রাজঘাটের সাতজন বাসিন্দার নেতৃত্বে চলছে কোহেলিয়া নদী দখল। এছাড়া বন পাহারায় নিয়োজিত আব্বাস উদ্দীন নামের একব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে মাতারবাড়ি ও মগনামা বনবিভাগের লোকজনের সাথে আঁতাত করে নির্বিচারে প্যারাবন কেটে কোহেলিয়া নদী ও বেড়িবাঁধ ঝুঁকিতে ফেলছে। মহেশখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা আইয়ুব আলী বনের জায়গা দখলে যেন চলে না যায়- সেজন্য চেষ্টা করে গেলেও এসব অবৈধ কাজ বন্ধে কোনো ধরনের উদ্যোগ নেই মাতারবাড়ি ফরেস্ট বনবিভাগ কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে- কালারমারছড়া ইউনিয়নের আফজলিয়াপাড়ার মীর আক্তার সড়কের পশ্চিমে কোহেলিয়া নদীর পশ্চিম পাশে দিনরাত চিংড়িঘের নির্মাণের কাজ চলছে। এসব ঘের নির্মাণের কাজ চললেও এসব দেখেও দেখে না স্থানীয় বিট অফিসের কেউ। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ- রাজঘাটের জসিম সিন্ডিকেট ও খন্দারাবিলের আব্বাস উদ্দীনের সঙ্গে বনবিভাগের লোকজনদের সখ্যতা রয়েছে। মূলত বনবিভাগের লোকদের টাকার বিনিময়ে চুপ করে রাখা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাতারবাড়ির কোহেলিয়া নদীর অপরপাড়ে মগনামা ইউনিয়ন। ওই এলাকা ছনুয়া রেঞ্জের আওতাধীন উজানটিয়া বনবিটের অধীনে। সেখানে কোহেলিয়ার পাড় ঘেঁষে প্যারাবন কাটার হিড়িক চললেও বনবিভাগ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বরং প্যারাবন কাটার জন্য তাদের সুযোগ করে দিচ্ছে। আর এতে মাতারবাড়ি নবাগত বিট কর্মকর্তা ও উজানটিয়া বিট কর্মকর্তারা জড়িত বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা মহেশখালী শাখার সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর ছিদ্দিক জানান, প্রতিবছর নানান ঘূর্ণিঝড় উপক‚লীয় অঞ্চলে আঘাত হানে। এসব ঘূর্ণিঝড় থেকে প্যারাবনগুলো এখানকার মানুষদের রক্ষা করে। কিন্তু এখন নির্বিচারে সেই প্যারাবনই কাটা হচ্ছে। নতুন করে চিংড়িঘের তৈরি হচ্ছে। আর এসব বন্ধে বনবিভাগ নিরবতার ভূমিকা পালন করছে বলে মনে হচ্ছে আমাদের।
মহেশখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা আইয়ুব আলী বলেন, নদীর চর কারো দখলে রাখার সুযোগ নেই। যদি কেউ দখলে রাখে তাদের উচ্ছেদের জন্য সংশ্লিষ্ট বিট কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হবে। পাশাপাশি দখলকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পূর্বকোণ/এসএ