চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও রাউজানে ঝরে পড়া মেধাবী শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় উৎসাহ যোগাতে এগিয়ে এসেছে ‘হেল্পলাইন’ হাটহাজারী উপজেলার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
৩০টি স্কুল-মাদ্রাসার ৮৬০ জন শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা বিস্তারে অবদান রাখছে সংগঠনটি।
জানা যায়, গড়দুয়ারা ইউনিয়নের ড.শহীদুল্লাহ একাডেমির দুই প্রাক্তন কৃতি শিক্ষার্থী আরব আমিরাত প্রবাসী ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক আবু মুছা তালুকদার এবং আমেরিকায় কর্মরত মোজাফফর আহমদ ২০১৫ সাল থেকে ব্যতিক্রমধর্মী হেল্পলাইন সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত করার পর থেকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে প্রতিবছর দুই উপজেলার বিভিন্ন স্কুল ও মাদ্রাসায় এসব কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। ২০১৬ সাল থেকে বিভিন্ন স্কুল ও ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করে আসছে সংগঠনটি।
প্রতিবছর জানুয়ারি মাস থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে হেল্পলাইনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদেরকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করেন। চলতি বছরে মেধাবী শিক্ষার্থী যারা টাকার অভাবে কলেজে ভর্তি হতে পারে না তাদের মধ্যে হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলার ৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৮৬০ জন অস্বচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীকে হেল্পলাইনের পক্ষ থেকে মোট ৮ লাখ ৬৫ হাজার টাকা শিক্ষাবৃত্তি পেলো।
হেল্পলাইনের উদ্যোক্তা আবু মুছা তালুকদার ও মোজাফফর আহমদ জানান, হেল্পলাইন দীর্ঘ আট বছর পেরিয়ে এই পর্যন্ত প্রকল্পটি থেকে পাঁচ হাজারের অধিক অস্বচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীরা মোট ৪৮ লাখ টাকা অনুদান পেয়েছেন- যা এই বছর দ্বিতীয় ধাপের কার্যক্রম শেষে অর্ধ কোটি পেরিয়ে যাবে। অত্র প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে এই কার্যক্রম তারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবে এবং অত্র অঞ্চলের কোনো শিক্ষার্থী যেনো আর্থিক অসচ্ছলতার দরুণ শিক্ষা হতে বিচ্যুত না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে যাবে।
হেল্পলাইনের শিক্ষা বৃত্তি প্রদানের প্রথম ধাপের কার্যক্রম শেষে সম্প্রতি হাটহাজারীতে প্রকল্পটির সার্বিক কার্যক্রম এবং এ মহতী উদ্যোগকে কিভাবে আরো সুন্দর ও বিস্তৃত করা যায় তা নিয়ে আলোচনায় মিলিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন হেল্পলাইনের দুই কর্ণধার আবুমুসা তালুকদার ও মোজাফফর আহমেদ। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন হেল্পলাইনের সদস্য আব্দুল মাবুদ তালুকদার, শাহাদাৎ হোসেন হিরু, বেলাল হোসেন তালুকদার, এ.জে.নওয়াজ তালুকদার রুমি ও সাইফুল ইসলাম বাবর।
হেল্পলাইনের সদস্যরা বলেন, এ অঞ্চলের দেশি ও প্রবাসী ভাইয়েরা নিজ নিজ জায়গা থেকে এগিয়ে আসলে হেল্পলাইনের এ কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়বে সমগ্র অঞ্চলে। কেননা সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে সকল প্রতিষ্ঠানকে বড় পরিসরে এখানে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব নয়। মিটিং শেষে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রেরিত সম্মাননা স্মারক সকল সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়- যা আগামীতে হেল্পলাইনের কার্যক্রমকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার অনুপ্রেরণা যোগাবে।
পূর্বকোণ/খোরশেদ/জেইউ/পারভেজ