চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

পাহাড় ও ঝর্ণার মিতালী

করিগরপাড়া-বিলাইছড়ি সড়ক নির্মাণকাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে

সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল 

২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ | ১২:৩৯ অপরাহ্ণ

রাঙামাটি জেলার দুর্গম উপজেলা বিলাইছড়িতে সড়ক যোগাযোগ নিশ্চিতে ২৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে কাপ্তাইয়ের কারিগরপাড়া থেকে বিলাইছড়ি পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণকাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।

২০২২ সালের ৮ অক্টোবর এ সড়কের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন দীপংকর তালুকদার এমপি। প্রকল্পের নাম হলো- কারিগরপাড়া থেকে বিলাইছড়ি উপজেলা সদর পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন ও ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ বা সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প।

এলাকাবাসী জানান, কাপ্তাই হ্রদের পানি শুষ্ক মৌসুমে শুকিয়ে গেলে জনসাধারণের চলাচলে যে দুর্ভোগে পড়তে হয়, সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হলে সে দুর্ভোগ কেটে যাবে। পর্যটনশিল্প গড়ে উঠবে। এতে মানুষের আয়-রোজগার বাড়বে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, পাহাড় ও প্রাকৃতিক ঝর্ণার জন্য বিখ্যাত রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলা পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মিত হয়ে গেলে এখানকার পাহাড় ও ঝর্ণার মনোরম সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন আভ্যন্তরিণ ও বিদেশি পর্যটকরা। এতে বাংলাদেশের সৌন্দর্য্য ও ভ্রমণপিপাসু মানুষের তীর্থস্থানে পরিণত হবে রাইংখ্যং নদীর তীরঘেঁষা রাঙামাটির দুর্গম বিলাইছড়ি উপজেলা এলাকা।

এ উপজেলাধীন ফারুয়ার সাথে বর্তমানে নির্মিতব্য সীমান্ত সড়কে ভবিষ্যতে যুক্ত হবে উপজেলা সদর। বর্তমান সময়ে আলোচিত দেশের অন্যতম পর্যটনস্পট সাজেকের চেয়ে অনেক বেশি পর্যটনস্পট নিয়ে এই এলাকা হবে বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পর্যটন হাব। এখানে অবস্থিত কয়েকটি ঝর্ণা হলো- দুপ্পানী ঝর্ণা, মুপ্পো ঝর্ণা, নৌকাটা ছড়া ঝর্ণা, স্বর্গপুর ঝর্ণা, গাছকাটা ছড়া ঝর্ণা ইত্যাদি।

রাঙামাটি জেলা এলজিইডিসূত্রে জানা যায়, কাপ্তাইয়ের কারিগরপাড়া থেকে বিলাইছড়ি পর্যন্ত সর্বমোট ৪০ কিমি দুর্গম সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। তন্মধ্যে ৩১ কিমি কাপ্তাই অংশে এবং ৯ কিমি বিলাইছড়ি উপজেলার অংশে পড়েছে। অধিকাংশ পথই উঁচুনিচু পাহাড়ের উপর দিয়ে গেছে।

জানা যায়, ২০২১ সালের ১৩ জুন একনেকে এ প্রকল্পটি পাস হয়। তখন এটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩২৬ কোটি টাকা। তবে বর্তমানে এ কাজের টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে ২৮০ কোটি টাকার। রাঙামাটি জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ শফি জানান, সংশোধিত এই টাকার মধ্যে কাজটি সম্পন্ন হবে বলে প্রত্যাশা করা যায়।

সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। তবে কাজ সম্পন্ন করতে সময় আরও বাড়তে পারে বলে জানান নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ শফি। এখানে পিসি গার্ডার ব্রিজ ১২টি ১২ প্যাকেজে এবং ৪০ কিলোমিটার সড়ক ১০টি প্যাকেজে বাস্তবায়নের কাজ চলছে। তিনি জানান, এই সড়কের জন্য প্রস্থে ৪০ ফুট মাটি থাকবে। তবে পাকা হবে আপাতত ১২ ফুট।

স্থানীয় সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় আন্তরিক। তার আন্তরিকতায় দুর্গম পাহাড়ে সড়ক যোগাযোগের নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। এতে করে পার্বত্য অঞ্চলের প্রতিটি উপজেলাকে সড়ক যোগাযোগের আওতায় এনে স্থানীয়দের জীবনমান উন্নত করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সড়কটির কাজ শেষ হলে স্থানীয় জনগণ তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য যেমন বাজারজাত করতে পারবে, তেমনি এই অঞ্চলের পর্যটনশিল্পের বিকাশ ঘটবে। এই সড়ক নির্মাণ হলে পর্যটনশিল্পের উন্নয়নের পাশাপাশি এই এলাকার জনগোষ্ঠীর উৎপাদিত পণ্য ঘরে বসেই বিক্রি করতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

 

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন