চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

মিয়ানমারে গোলাগুলি, নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ৫ স্কুল বন্ধ

নাইক্ষ্যংছড়ি সংবাদদাতা

২৯ জানুয়ারি, ২০২৪ | ৫:১৪ অপরাহ্ণ

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সে দেশের সেনাবাহিনীর তুমুল লড়াই চলছে। আর এ লড়াইয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক। গোলাবারুদ আর বিস্ফোরকের বিকট শব্দে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমের সীমান্ত এলাকায় কম্পন সৃষ্টি হচ্ছে। কখনো থেমে থেমে আবার কখনো সীমান্তের ওপারে শোনা যাচ্ছে গোলাগুলির বিকট শব্দ। ফলে নিরাপত্তার শঙ্কায় নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় একদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন।

 

সোমবার (২৯ জানুয়ারি) বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রি রতন চাকমার আবেদনের প্রেক্ষিতে নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করে ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তের কাছে পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয় একদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

 

বন্ধ হওয়া স্কুলগুলো হলো- বাইশপারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাজাবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুমব্রু পশ্চিমকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রেজু গর্জন বুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

 

সীমান্তে গিয়ে জানা যায়, মিয়ানমার সীমান্তের অভ্যন্তরে আরকান আর্মি ও আরএসও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সাথে জান্তা সরকারের গুলি বিনিময় চলছে। ফলে সীমান্তের আশেপাশে বসবাসরত লোকজন ও স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।

 

তারা আরও জানান, মিয়ানমার-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া ঘেষে মিয়ানমার অংশে ৩ দিনে অর্ধশতাধিক মর্টার শেলের প্রকট শব্দে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কেঁপে উঠেছে। আর এ কাঁপুনিতে আতঙ্কিত হচ্ছে সীমান্তবাসী।

 

ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আজ সকালেও মর্টার শেল বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। এতে কেউ হতাহত না হলেও আতঙ্কে রয়েছেন সীমান্তে বসবাসকারী স্থানীয় বাসিন্দারা।

 

ইউপি সদস্য দিল মোহাম্মদ ভুট্রো বলেন, আমরা যারা এপারে বসবাস করছি সবাই আতঙ্কে আছি। কখন কোন সময় কি হয় জানি না। বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাহিরে না যাওয়ার জন্য স্থানীয় জনগণকে সতর্ক করা হচ্ছে।

 

গত ৮-১০ দিন থেকে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর গোলাগুলি হচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তবে কী কারণে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে তা এখনো জানা যায়নি।

মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রদেশে গত এক বছরের বেশি সময় ধরে চলে আসা সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের সংঘাত বর্তমানে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। কদিন ধরেই সীমান্ত এলাকায় ভারী অস্ত্র থেকে ছোড়া গুলি এবং মর্টারশেলের শব্দ শোনা যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে আগুনের ধোঁয়া। এর আগেও মিয়ানমার থেকে ছোড়া গোলা বাংলাদেশ সীমান্তে এসে পড়েছে।

 

উল্লেখ্য, মিয়ানমারে সংঘাতময় পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যার প্রভাব বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যেও এসে পড়েছে। এ অবস্থায় মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সদস্যদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান।

পূর্বকোণ/পিআর/এসি

শেয়ার করুন