চট্টগ্রাম শনিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৪

কাঞ্চননগরে গ্রামীণ আবহে পর্যটন স্পট

মো. দেলোয়ার হোসেন

১৯ জানুয়ারি, ২০২৪ | ৮:০৭ অপরাহ্ণ

উপজেলার কাঞ্চননগরের পাহাড়ি এলাকায় ভ্রমণপিপাসু মানুষের জন্য গ্রামীণ আবহে গড়ে তোলা হয়েছে পৃথক পৃথক পর্যটন স্পট।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, কাঞ্চননগর এলাকায় শরফুদ্দীন নামে ৬০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি পাহাড়ি এলাকায় কিছু জায়গা সংস্কার করে ‘মাটির টানে’ নাম ব্যবহার করে পর্যটন স্পট তৈরি করেন। সেখানে একটি বাঁশের তৈরি ঘর, কয়েকটি ছাতা, ৩টি ছোট ছোট দোলনা, কিছু বাঁশ দিয়ে বৈঠকখানা তৈরি করার পাশাপাশি ফুল বাগান সাজাতে দেখা যায়। প্রবেশদ্বারে একটি দৃষ্টিনন্দন তোরণ নির্মাণ করেছেন বাঁশ দিয়ে। ১৭০ একর জায়গা নিয়ে ‘মাটির টানে’ পর্যটন স্পটটি সম্প্রতি চালু করেছেন বলে জানান তিনি। প্রবেশমূল্য নির্ধারণ করেছেন ২০ টাকা হারে। প্রতিদিন শতাধিক তরুণ-তরুণী প্রবেশ করে বলে তিনি জানান। এখানে তিনি রিসোর্ট, তাঁবু, সুইমিং পুল করে ফয়’স লেকের আদলে সাজাবেন বলেও জানান।

 

অপরদিকে ‘খামার বাড়ি শিশু স্বর্গ’ পর্যটন স্পটটি শিশুদের জন্য ২ বছর ধরে বিভিন্ন গাছের সমাহারে তৈরি করা হয়েছে, যা চলতি বছর ১ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে। এ পর্যটন স্পটটি স্থানীয় হাজী রাসেল তার নিজ বাড়িভিটায় স্থাপন করেছেন। তিনি একজন নার্সারী ব্যবসায়ী হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। তার সে গাছের পরিচর্যাকে কাজে লাগিয়ে এ পর্যটন স্পট তৈরি করেছেন বলে জানান। তার সাথে সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন পটিয়া এলাকার কামরুল ইসলাম। তাদের পরিকল্পনা থাইল্যান্ডের আদলে সোনাইছড়ি খালের পাশের পুকুরটিকে লেক বানিয়ে এ বিনোদন কেন্দ্রটি আরো সুন্দর করার।

 

এখানে তারা একটি নৌকা ভাড়া দিয়ে ১৫ মিনিটে ২৫ টাকা, আধাঘণ্টায় ৫০ টাকা হারে বিনোদনের জন্য নিচ্ছেন। তারা জানান, এখানে শিশুদের বিকাশের জন্য ২ ভাগে বিভক্ত করে বিনোদন ও শিক্ষনীয় যেমন: ছবি আঁকা, মুক্তিযুদ্ধের চিত্র প্রদর্শনী, স্থানীয় ও বিদেশি ঐতিহ্যের বিষয়, আন্তর্জাতিক কাব্য ও বিভিন্ন বই পড়ার সুযোগ থাকবে। রয়েছে শিশুদের বিনোদনের জন্য রেল রাইড, বুলরাইড, চিলড্রেন প্লে গাউন্ড, বাস্কেট বল, কার রেসিং, দোলনা ইত্যাদি। ভিন্ন আঙ্গিকে শিশুদের নিয়ে কাজ করার মনোভাবে এগোচ্ছেন তারা।

 

গ্রামীণ শীতল পাটি, বিভিন্ন দিবস ও পহেলা বৈশাখে ভিন্নধর্মী আয়োজন থাকবে বলেও জানান তারা। পাশাপাশি চন্দনাইশের ঐতিহ্যবাহী চা-বাগানের ইতিহাস, চন্দনাইশের প্রসিদ্ধ পেয়ারার কাহিনী তুলে ধরা হবে এ বিনোদন কেন্দ্রে। প্রতিদিন দুপুর ২টা-৫টা পর্যন্ত চলবে কেন্দ্রটি। এখানে মিনারেল ওয়াটারের পানির বোতলে ২ হাজার ৫শ টব ও ১৫ হাজার বনজ গাছের চারা স্থাপন করা হয়েছে।  মাত্র ২০ টাকা প্রবেশমূল্যে এ দুইটি বিনোদন কেন্দ্রে প্রতিদিন শতাধিক কিশোর-কিশোরীকে প্রবেশ করতে দেখা যায়। প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত উন্মুক্ত রাখা হয় ভ্রমণপিপাসু মানুষের জন্য।

 

রাসেল জানান, প্রতিদিন শতাধিক পর্যটক আসে। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলাকালীন স্কুল বা কলেজ ড্রেসে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বেশি পর্যটক আসে বলে জানান তিনি।

 

কীভাবে যাবেন: উপজেলার রৌশনহাট থেকে পূর্বদিকে ৪ কি.মি পথের মধ্যে কিছু অংশ সড়ক কার্পেটিং, কিছু অংশ ব্রিকসলিন করা থাকলেও অর্ধেকাংশ কাঁচা রাস্তা দিয়ে যেতে হবে সেখানে।

 

তিনি বলেন, এখানে পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় পানীয় জলের সংকট রয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় পর্যটনকেন্দ্র গড়ার এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী। পাশাপাশি তাদের যেকোন রকম সাহায্য-সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

 

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট