কক্সবাজার -১ আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা আশংকাজনক হারে বেড়েছে। অসংখ্য ঘটনা ঘটলেও মামলা হয়েছে হাতেগোনা। গত ১৪ জানুয়ারি জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবুল কালাম আবুকে অপহরণ করে একদল সন্ত্রাসী। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে চোখের উপরিভাগে ছুরিকাঘাত, সারাশরীরে হাতুড়ি ও লোহার রড় দিয়ে অমানুষিক মারধর, মলমূত্র খেতে বাধ্য করা এবং মুখে কসটেপ লাগিয়ে হাত-পা বেঁধে মারা গেছে ভেবে ১৫ জানুয়ারি সকালে আটারকুম এলাকায় ফেলে যায় সন্ত্রাসীরা। গুরুতর আহত আবু চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও চক্ষু হাসপাতালে একসাথে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আলোচিত এই ঘটনায় বুধবার (১৭ জানুয়ারি) চকরিয়া থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। আহতের বড় ভাই সাহারবিল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মহসিন বাবুল বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান নবী হোছাইনসহ ১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। বাদী মামলায় দাবি করেন হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ছোট ভাইকে অপহরণের পর মারধর ছাড়াও বিপুল নগদ টাকা, মুঠোফোনসহ বিভিন্ন মালামাল লুট করেছে।
তিনি আরও বলেন, হাতঘড়ির পক্ষে কাজ করায় ট্রাক প্রতীকের প্রার্থীর কর্মী সমর্থকরা আমার ভাইকে হত্যার চেষ্টা করে।
মামলার কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, আবুল কালাম সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের হাতঘড়ির পক্ষে এজেন্ট ছিলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোছাইন। গত ১৪ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে কক্সবাজার যেতে আবুল কালাম বাড়ি থেকে বের হন। সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের গেটে পৌঁছালে তাকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে অপহরণ করা হয়। এই অপহরণের নেতৃত্ব দেন ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোছাইন। মাইক্রোবাসে তুলে মুখ ও চোখ বেঁধে ফেলা হয়। এরপর প্রস্রাব করে তাকে খাওয়ানো হয়। খেতে না চাইলে ব্যাপক মারধর করা হয়। একপর্যায়ে তাকে মাইক্রোবাসের নিচে বেঁধে ফেলে রাখা হয়। পরে ১৫ জানুয়ারি ভোরে আবুল কালামের চোখে ছুরিকাঘাতের পর সাহারবিল ইউনিয়নের আটারকুম নামক এলাকায় একটি ডোবায় ফেলে দেওয়া হয়। ফজরের নামাজের পর ডোবায় আবুল কালামকে পড়ে থাকতে দেখে পরিবারের সদস্যদের খবর দেন মুসল্লীরা।
বহুল আলোচিত এই ঘটনার মামলার এজাহারনামীয় আসামি মৃত নুরুল কবিরের ছেলে জুনাইদুল হককে (৪৫) জনগণ পাকড়াও করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী মামলা এন্ট্রির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বুধবার দুপুরেই এজাহারনামীয় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ ব্যাপারে সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নবী হোছাইন জানান, আমার উন্নয়নমুখী কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত ও সুনাম ক্ষুন্ন করতে এই মামলায় আমাকে জড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি ইউপি নির্বাচনে মহসিন বাবুলের বিরুদ্ধে অর্থাৎ আমার পক্ষে কাজ করায় আমার ভাই ভাগিনা ও কর্মীদের উদ্দেশ্যমূলক আসামি করা হয়েছে।
পূর্বকোণ/জাহেদ/জেইউ