কক্সবাজারের চকরিয়ায় চিংড়ি জোনের পরিত্যক্ত জমি থেকে মোহাম্মদ হোসেন (৫৭) নামের এক মৎস্য চাষির গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে চিংড়িজোন খ্যাত সাহারবিল ইউনিয়নের রামপুর মৌজার রামপুর সমিতির জমি থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত মোহাম্মদ হোসেন মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ছনখোলা পাড়ার মৃত আবুল খাইরের ছেলে।
নিহতের ছোট ভাই আবুল কাশেম জানান, আমার বড় ভাই রামপুর সমিতির ৪৮ একর চিংড়ি ও লবন মাঠ এলাকার মধ্যে খামার ঘর তৈরি করে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। মঙ্গলবার রাতে বদরখালীর আজগর নামে এক ব্যক্তি আমার ভাইকে নানা ছলচাতুরীর মাধ্যমে পরিত্যক্ত জমিতে রেখে যান।
তিনি আরও বলেন, বুধবার সকাল ৮টার দিকে পরিবারের সদস্যরা ফোন করলে জনৈক কিশোর ফোন রিসিভ করে জানায় আপনারা তাড়াতাড়ি রামপুরের ঘরের নিকটবর্তী মাঠে চলে আসুন, যাকে ফোন করেছেন তিনি মাটিতে পড়ে রয়েছে। এ কথা শুনে ছুটে যায় ভাই ও সন্তানেরা। বাবার অবস্থা দেখে পুলিশকে খবর দেন তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন শ্রমিক জানান, বদরখালীর আজগরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অনেক তথ্য পাওয়া যাতে পারে। এছাড়া হত্যার পেছনে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির নামও বলে তারা। তাদের মতে মৎস্য বিভাগের ৪৮ একর জমি উচ্চতর আদালত থেকে রামপুর সমিতির অনুকূলে রায় পায়। এর পরও চিংড়ি ও লবণ উৎপাদনের লাভজনক এই জমির দিকে নজর ছিল অনেকে। একাধিক বার দখল-বেখলও হয় এ জমি। জাতীয় নির্বাচন পরবর্তী সময়ে জমির বাঁধে বসবাস করা লোকজন (রামপুর সমিতির সদস্য) জমিটি নিজেদের দখলে নিতে পারে আশংকায়ও খুনের ঘটনা ঘটতে পারে বলে স্থানীয়দের অভিমত।
চকরিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ মেহেদী হাসান বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। সেখানে গিয়ে এক ব্যক্তির মরদেহ মাটিতে পড়ে থাকতে দেখি।
তিনি আরও বলেন, আমি নিজে মরদেহের প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছি। লাশের পেছনে কোমরের বাম পাশে গুলিবিদ্ধ হওয়ার আলামত খোঁজে পাওয়া যায়। পরে লাশ থানায় নিয়ে আসি।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, খুনের খবর পেয়ে চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রাকিব উর রাজাকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সন্ধ্যা পর্যন্ত হত্যার কারণ নির্ণয়ে চেষ্টা চালাই। এখনো হত্যার রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি।
তিনি আরও বলেন, রাতেই (বুধবার) লাশের ময়নাতদন্ত করতে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত এজাহার দিলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। তা-ও পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।
পূর্বকোণ/জাহেদ/জেইউ/পারভেজ