কক্সবাজারের টেকনাফে ‘বাংলা চ্যানেল’ পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশ্যে সাঁতারে নেমেছেন ২ নারীসহ ৪৩ জন। বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহ্পরীরদ্বীপের পশ্চিমপাড়া সমুদ্রসৈকত থেকে এই সাঁতার শুরু করেন। এ সাঁতার প্রতিযোগিতা উদ্ধোধন করেন টেকনাফ উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নিবার্হী ম্যাজিষ্টেট্র মো এরফানুল হক চৌধুরী।
দুই নারীর একজন ভারতের রচনা শর্মা এবং আরেকজন বাংলাদেশের এম এস টি শোহাগী আক্তার। কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে স্রোতোধারাটির নাম ‘বাংলা চ্যানেল’। এই চ্যানেলের দূরত্ব ১৬ দশমিক ১ কিলোমিটার। সাঁতার শেষ হবে সেন্টমার্টিন দ্বীপের উত্তর সৈকতে।
১৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দূরত্বের বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিয়ে সাঁতার শেষ হবে সেন্টমার্টিন দ্বীপের উত্তর সৈকতে গিয়ে। এবারও সাঁতারের আয়োজন করেছে ‘ষড়জ অ্যাডভেঞ্চার’ ও ‘এক্সট্রিম বাংলা’। ১৮তম বাংলা চ্যানেল সাঁতার- ২০২৩’ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে গত সোমবার মঙ্গলবার ও বুধবার বিকেলে শাহপরীরদ্বীপ সমুদ্র সৈকতে সাঁতারুরা দল বেঁধে অনুশীলন করেছেন। এই আয়োজনে সহযোগিতার আছেন ভিসাথিং, ইউনাইটেড সিকিউরিটিজ লিমিটেড,বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ড,সরকার এগ্রো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
এবারের বাংলা চ্যানেল সাঁতারের প্রধান সমন্বয়ক ও ষড়জ অ্যাডভেঞ্চারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লিপটন সরকার। এখন পর্যন্ত ১৯ বার বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন তিনি। এর আগে এই চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার মতো দুঃসাহসিক অভিযান তাও এক-দুবার নয়; গুণে গুণে ১৭ বার (২০১২ সালে ২ বার পাড়ি দেন, সেই হিসেবে ১৭) পাড়ি দিয়েছেন তিনি। এইবার সফল হলে টানা ২০ বার বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার একক রেকর্ড গড়বেন।
এবারের সাঁতারুরা হলেন- ফজলুল কবির সিনা, লিপটন সরকার, মো. মনিরুজ্জামান, আয়রনম্যান খ্যাত মোহাম্মদ শামসুজ্জামান আরাফাত, শেখ মাহবুব উর রহমান, আল্লামা দিদার, সালাহ উদ্দিন, মো. কামাল হোসেন, এমডি জিহাদ হুসেন, আবাদুল ইসলাম, এমডি ইলিয়াস হোসেন, মাহাদী হাসান সায়েম, আব্দুল্লাহ আল সাবিত, এস এম শারিয়ার মাহমুদ, হুমায়েদ ইছাহাক মুন, রচনা শর্মা (ভারতীয়), আতিকুল ইসলাম, এমডি ফজলে রাব্বি চৌধুরী, এমডি আব্দুল মতিন, জয়তু দাস, এমডি মইজ উদ্দিন মেরাজ, ফরিদ আহমেদ খান, আব্দুল ইলা, মোহাম্মদ তামিম পারভেজ, মুরাদ হোসেন, এমডি গোলাম হাফিজ, সবুজ কুমার বর্মন, এমডি নাদিম মাহমুদ, এমডি মাহমুদুল হাসান, হাসান ইমাম, এমডি জামিল হোসেন, জাফর সাদাক, শরভ শমাদ্দার, এমডি মুশা আহমেদ, এমডি নাসির উদ্দিন, মাহমুদুর রহমান বনি, সাইফুল ইসলাম রাসেল, এমডি আবুল্লাহ আল রোমান, সুমন বালা, এমডি ফারুক হোসেন, এমএসটি শোহাগী আক্তার, মো. নাজমুজ সাকিব শিমুম ও উজ্জ্বল চৌধুরী।
প্রধান সমন্বয়ক ও ষড়জ অ্যাডভেঞ্চারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লিপটন সরকার বলেন, এবার একজন ভারতীয় নারীসহ ৪৩ জন সাঁতারু অংশ নেবেন। এই সাঁতার আন্তর্জাতিক রীতি মেনে পরিচালনা করা হচ্ছে। নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক সাঁতারুর জন্য বোট ও উদ্ধারকর্মী রয়েছে। বাংলা চ্যানেল সাঁতারকে আন্তর্জাতিক করতে পেরেছি। ধারাবাহিকভাবে এ নৌপথে সাঁতার অনুষ্টিত হচ্ছে। প্রতিবারেই সাঁতারুরা অংশগ্রহণ বলে দিচ্ছে বাংলাদেশে দূরপাল্লার সাঁতার জনপ্রিয়।
বাংলাদেশকে বিশ্বে পরিচিত করে তুলতে এবং মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে বাংলা চ্যানেল আয়োজন প্রতিবছর করছে ষড়জ অ্যাডভেঞ্চার।
বঙ্গোপসাগরে দূরপাল্লার সাঁতারের উপযোগী ১৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দূরত্বের বাংলা চ্যানেল আবিষ্কার করেন প্রয়াত কাজী হামিদুল হক। ২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো বাংলা চ্যানেল সাঁতার অনুষ্ঠিত হয়। সেবার সাঁতারে অংশ নিয়েছিলেন লিপটন সরকার, ফজলুল কবির সিনা ও সালমান সাইদ।
পূর্বকোণ/পিআর/এএইচ