চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেবের সমর্থক এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া তিনটি গাড়ি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (২১ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নের ইছামতি আলীনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবর্ষণ ও ভাঙচুরের সময় পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বলে ওই ইউপি চেয়ারম্যানসহ তার স্বজনেরা অভিযোগ করছেন। তাদের দাবি, আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর সমর্থক স্থানীয় রিয়াজ উদ্দিন রিয়াদের নেতৃত্বে গুলিবর্ষণ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
রিয়াজ উদ্দিন রিয়াদের দাবি, তিনি নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থক ঠিক আছে। কিন্তু তিনি এখনো নির্বাচনী কোনো প্রচার-প্রচারণার কাজে এলাকায় সম্পৃক্ত হননি।
জানা যায়, গতকাল বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মোতালেবের সমর্থক রিদুয়ানুল ইসলাম সুমনের বাড়ি লক্ষ্য করে দুর্বৃত্তরা গুলি ছুড়েন। এ সময় দুর্বৃত্তরা রিদুয়ানুল ইসলাম সুমনের চাচার ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস, স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মোতালেবের নির্বাচনী কার্যালয়, নির্বাচনী প্রচারণার কাজে নিয়োজিত সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা ও সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মিনি ট্রাক ভাঙচুর করেন।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান রিদোয়ানুল ইসলাম সুমনের চাচা মো. মামুনুর রশিদ বলেন, সংসদ সদস্য আবু রেজা নদভীর সমর্থক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াদের নেতৃত্বে শতাধিক সন্ত্রাসী আমাদের বাড়ি লক্ষ্য করে শতাধিক গুলি ছোড়েন। তারা আমাদের একটি মাইক্রোবাস, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোতালেবের নির্বাচনী কার্যালয়, নির্বাচনী প্রচারণার কাজে নিয়োজিত একটি অটোরিকশা ও সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মিনি ট্রাক ভাঙচুর করেন। পরে তারা নদভীর পক্ষে স্লোগান দিয়ে দিয়ে চলে গেছেন। এ সময় ঘটনাস্থলের পাশেই পুলিশের একটি টহল দল উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু পুলিশের সদস্যরা কোনো ভূমিকা রাখেননি।
পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রিদোয়ানুল ইসলাম সুমন জানান, গভীর রাতে বর্তমান এমপি নদভী সাহেবের নামে স্লোগান দিতে দিতে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি করেছে সন্ত্রাসীরা। পুলিশের উপস্থিতিতে গুলি করা হয়েছে। পুলিশের গাড়িসহ দুটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। এ ছাড়া সন্ত্রাসীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী এমএ মোতালেব সাহেবের নির্বাচনি অফিস ভাঙচুর করেছে।
গুলিবর্ষণ ও ভাঙচুরের বিষয়ে জানতে চাইলে পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য রিয়াজ উদ্দিন রিয়াদ বলেন, আমি গত ১০ দিন ধরে গ্রামের বাড়িতেই যাইনি। চট্টগ্রাম শহরেই আছি। ইউপি চেয়ারম্যান রিদুয়ানুল ইসলাম সুমন ও তার লোকজন গুলিবর্ষণ ও ভাঙচুরের ঘটনা সাজিয়ে আমাদের ফাসানোর চেষ্টা করছেন।
সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী নোমান বলেন, বুধবার দিবাগত রাতে পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নের ইছামতি আলীনগর এলাকায় গুলিবর্ষণ ও ভাঙচুরের খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সেখান থেকে কিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ ও স্থানীয় কিছু মানুষের প্রত্যক্ষ নিরপেক্ষ সাক্ষী নেওয়া হচ্ছে। তবে এ ঘটনায় লিখিত কোনো অভিযোগ বা মামলা হয়নি।
পূর্বকোণ/পিআর/এএইচ