চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

মাছ চাষে ঈর্ষণীয় সাফল্য

এনায়েত হোসেন মিঠু

২৪ নভেম্বর, ২০২৩ | ৮:১৫ অপরাহ্ণ

মাত্র এক একর পরিমাণ ঘেরে মাছ চাষ করে ১৪ বছরের ব্যবধানে বর্তমানে দুইশ একর ঘের ও পুকুরে মিঠা পানির মাছ চাষ করছেন মিরসরাইয়ের আনোয়ার হোসেন।

 

২০০৯ সালের দিকে পরিবারের দেয়া ৪ লাখ টাকা দিয়ে মাছ চাষ শুরু করলে সাফল্য তাকে ধরা দিয়েছে খুব অল্প সময়ে। বর্তমানে তিনি প্রতি বছর প্রায় ৬৭ কোটি টাকা মূল্যের মাছ উৎপাদন করেন। ইতোমধ্যে জিতে নিয়েছেন জেলা-উপজেলা পর্যায়ের সেরা মাছ চাষির পুরস্কার। জানা যায়, পরিবার থেকে নেয়া মাত্র চার লাখ টাকায় এক একর পরিমাণ ঘেরে মাছ চাষ শুরু করেন আনোয়ার এগ্রো কমপ্লেক্স এর স্বত্বাধিকারী মো. আনোয়ার হোসেন।

 

২০০৯ সালের দিকে উপজেলার মুহুরী প্রকল্প এলাকায় মাছ চাষ শুরু করে বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম জেলায় সেরা মাছ চাষিদের একজন। মাছ চাষে সফল এ তরুণ ২০১৮ সালে উপজেলার শ্রেষ্ঠ মৎস্য চাষির পুরস্কার পান এবং ২০১৯ সালে চট্টগ্রাম জেলার শ্রেষ্ঠ মৎস্য চাষির পুরস্কার পান। সরকারের মৎস্য বিভাগ তাকে এই পুরস্কার দেয়। 

 

সর্বশেষ তিনি ২০২২ সালে জাতীয় পর্যায়েও পুরস্কারের জন্য প্রাথমিক প্যানেলে মনোয়ন পান। বর্তমানে আনোয়ার এগ্রো কমপ্লেক্স নামের প্রতিষ্ঠানটি ফিশিং, ডেইরি, প্যাটানিং এন্ড সমন্বিত কৃষি নির্ভর প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার আনোয়ার হোসেন নিজেই। বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানটির অধীনে নোয়াখালীর সুবর্ণচর, ফেনীর সোনাগাজী, মিরসরাইয়ের মুহুরী প্রকল্প, করেরহাট, মিঠাছরা ও মোটবাড়ীয়া এলাকায় ২০০ একর পরিমাণ পুকুর ও ঘেরে মাছ চাষ হচ্ছে। যাতে প্রতি বছর বিভিন্ন জাতের প্রায় ১ হাজার ৮শ টন মাছ উৎপাদন হচ্ছে।

 

যার বর্তমান বাজার মূল্য ৪৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা প্রায়। আনোয়ার হোসেন পূর্বকোণকে জানান, বর্তমানে ২০০ একর পুকুর এবং ঘেরে তিনি বিভিন্ন জাতের মাছ চাষ করছেন। তার মধ্যে ১০০ একর যৌথভাবে এবং বাকি ১০০ একর নিজে চাষ করেন। গত ১৪ বছর সময়ে তিনি নিজের আয়ের অর্থ দিয়ে ৬০ একর পরিমাণ মাছের ঘের ও পুকুর ক্রয় করেছেন। বাকিগুলো ইজারা নিয়ে চাষ করছেন।

 

এমন সাফল্যের শুরুটা মোটেও ভালো ছিলো না জানিয়ে আনোয়ার বলেন, ‘পরিবার থেকে মাত্র চার লাখ টাকা নিয়ে আরেক বন্ধুর সাথে মাছ চাষ শুরু করি। প্রথম দিকে তেমন সাফল্য আসেনি। অনেক চড়াই-উৎরাই পার করতে হয়েছে। অনেক সময় লোকসানের মুখেও পড়তে হয়েছে। তবে আমি হাল ছাড়িনি। সরকারের মৎস্য বিভাগের নিয়মিত পরামর্শ নিয়ে মিঠা পানির মাছ চাষে ঠিকই সফল হয়েছি।’

 

এসময় বর্তমানে মৎস্য খাদ্য ও ওষুধের দাম অতিরিক্ত হারে বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে আনোয়ার হোসেন বলেন, বাজারে মাছের দাম তুলনামূলক তেমন বাড়েনি। এর কারণে ছোট-বড় সব ধরনের চাষিদের এখন ভুক্তে হচ্ছে। এ বিষয়ে সরকারের উচিৎ খাদ্য এবং ওষুধে যথার্থ ভর্তুকি দেয়া।’ আনোয়ার এগ্রো কমপ্লেক্স এর কর্ণধার আনোয়ার হোসেনের সফলতা নিয়ে মিরসরাই উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা নাছিম আল মাহমুদ পূর্বকোণকে বলেন, ‘সরকারের মৎস্য বিভাগ তৃণমূল পর্যায়ে চাষিদের পরামর্শ ও নানাবিধ সুযোগ সুবিধা দিয়ে সহায়তা করছে। মিরসরাইয়ে অনেকেই মাছ ছাষের মধ্য দিয়ে তাদের ভাগ্য বদল করেছেন। তাদের মধ্যে আনোয়ার হোসেনও অন্যতম। তিনি দুই দুই বার উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে সেরা মৎস্য চাষির পুরস্কার পেয়েছেন।’

 

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট