চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

সীতাকুণ্ডে ৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত, উপকূলে বেড়েছে ঝড় ও দমকা হাওয়া

সীতাকুণ্ড সংবাদদাতা

২৪ অক্টোবর, ২০২৩ | ১১:১৫ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ঘূর্ণিঝড় হামুনকে ঘিরে সৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। উপকূলীয় বাসিন্দাদের আশ্রয় দিতে ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে ৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্র। এছাড়া জরুরি চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত আছে ১৫টি মেডিকেল টিম, প্রয়োজনীয় অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস এবং সাড়ে ১২ শ সিপিপির কর্মী। সিপিপির কর্মীরা এবং ইউপি চেয়ারম্যানরা নিজ নিজ উদ্যোগে এলাকায় সতর্ক সংকেতের প্রচারণা চালিয়ে সবাইকে সচেতন করছেন।

 

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে কুমিরা-সদ্বীপ নৌ চলাচল সরকারিভাবে বন্ধ রাখা হলেও ব্যক্তিগত নৌকা ভাড়া নিয়ে আসা যাওয়া করছেন কিছু কিছু যাত্রী। ফলে দুর্ঘটনার আশংকা দেখা দিয়েছে।

 

সরেজমিনে সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়কে ঘিরে দুর্যোগের আশংকায় আতংকিত হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। এরই মধ্যে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ৭ নম্বর সতর্ক সংকেতের কথা জানিয়ে মাইকিং করেছে ইউপি চেয়ারম্যান ও ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) কর্মীরা। কিন্তু দুর্যোগ সত্ত্বেও আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছে না কেউ।

 

পরিদর্শনকালে উপজেলার কুমিরা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে.এম রফিকুল ইসলাম, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন ও সিপিপির টিম লিডার মো. শাহাজাহানসহ অন্যান্যরা হ্যান্ড মাইক নিয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য এবং আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাবার জন্য প্রচারণা করছেন।

 

অন্যদিকে প্রশাসনের প্রচারণা ও নির্দেশনার কারণে দুর্যোগপূর্ণ আবাহাওয়ায় মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে কুমিরা-সদ্বীপ নৌ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হলেও কিছু কিছু ব্যক্তিগত নৌকা ভাড়া করে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন কিছু যাত্রী। যার ফলে যেকোন সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।

 

এ বিষয়ে নৌকা চালক রিপন জলদাশের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চার হাজার টাকা ভাড়ায় তিনি এক রোগী নিয়ে সন্দ্বীপ থেকে কুমিরায় এসেছেন। রোগী হওয়ায় তিনি ঝুঁকি নিয়েছেন। কিন্তু আরো অনেক যাত্রীকে বিভিন্ন নৌকায় নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও পারাপার হতে দেখা গেছে। দেখা গেছে কয়েকটি মাছ ধরার নৌকাও।

 

উপজেলার ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) টিম লিডার মো. শাহাজাহান জানান, দুর্যোগপূর্ণ এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা প্রস্তুত রয়েছেন। ইতোমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রগুলো পরিচ্ছন্ন করে সেখানে প্রশাসনের সহযোগিতায় শুকনো খাবার, পানীয় জলসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।

 

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ বলেন, ঘূর্ণিঝড়কালীন কিংবা পরবর্তী যেকোন জরুরি সেবা দেয়ার জন্য আমরা ১৫টি মেডিকেল টিম নিয়ে সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছি। আশা করছি সর্বোচ্চ সেবা আমরা দিতে পারব।

 

সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে.এম রফিকুল ইসলাম জানান, ঘূর্ণিঝড় হামুনকে সামনে রেখে আমরা দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছি। ৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দেয়া হয়েছে। উপকূলবাসীকে কোন ঝুঁকি না নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে আসার জন্য তাৎক্ষণিক সেবা প্রদানের জন্য চিকিৎসক, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসসহ সব ধরনের ব্যবস্থা রেখেছি। আমাদের ইউপি চেয়ারম্যানরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করছেন। খোঁজ খবর নিচ্ছেন এমপি মহোদয় ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ অন্যান্যরা। সবাই মিলে এ দুর্যোগ আমরা মোকাবিলা করতে প্রস্তুত রয়েছি।

 

অন্যদিকে সতর্ক সংকেত উপেক্ষা করে কিছু কিছু নৌকায় কুমিরা-সদ্বীপ পারাপার বিষয়ে ইউএনও বলেন, আমরা সতর্ক সংকেতের কারণে নৌ চলাচল বন্ধ করেছি। এরপরও যারা পারাপার হচ্ছে তাদের বিষয়ে সদ্বীপের ইউএনও মহোদয়ের সাথেও কথা বলব। যাতে কেউ এই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে না পারে।

 

পূর্বকোণ/সৌমিত্র/জেইউ/পারভেজ

শেয়ার করুন