চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

আ. লীগে প্রার্থী ২ বিএনপিতে ৭

সুমন শাহ, আনোয়ারা

২৩ অক্টোবর, ২০২৩ | ৪:৩৬ অপরাহ্ণ

টানেলের এক প্রান্তে চট্টগ্রাম শহর, অপর প্রান্তে রয়েছে আনোয়ারা উপজেলা। শহরের খুব কাছে থাকলেও এ উপজেলা এতদিন অবহেলিত ছিল। টানেল নির্মাণের মধ্য দিয়ে আরেকটি শহরে রূপ নিচ্ছে আনোয়ারা। ইতোমধ্যে আনোয়ারা উপজেলায় জমির দাম কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।

আনোয়ারা উপজেলা প্রান্তে টানেল সংযোগ সড়কের দুই পাশে গড়ে উঠছে ছোট-বড় অসংখ্য শিল্প-কারখানা। তাই এখন চট্টগ্রামের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে আনোয়ারা-কর্ণফুলী উপজেলা  চট্টগ্রাম-১৩ আসনটি।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে রাজনৈতিক দলগুলো প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভোটাররাও ব্যস্ত বিগত দিনে তাদের চাওয়ার-পাওয়ার হিসাব মেলাতে। এরই মধ্যে মনোনয়ন-প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে।

এ আসনকে কেন্দ্র করে বিএনপির কোনো কার্যক্রম চোখে না পড়লেও তাদের গ্রুপিং দৃশ্যমান। ফলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগে ভূমিমন্ত্রীর বিকল্প কোনো প্রার্থী না থাকলেও বিএনপিতে প্রার্থীর ছড়াছড়ি ।

আওয়ামীলীগ থেকে টানা তিনবার নির্বাচিত বর্তমান সরকারের ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ব্যাপক উন্নয়নের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের এককপ্রার্থী হিসেবে শক্ত অবস্থানে আছেন। তার মনোনয়ন পাওয়া অনেকটাই নিশ্চিত বলে ধারণা করছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের সঙ্গে আনোয়ারা-কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের সক্রিয় নেতারা রয়েছেন। তিনি দুই উপজেলায় তার জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। নির্বাচনী এলাকার জনসাধারণের কাছে তিনি সৎ-পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ ও ক্লিন ইমেজের মন্ত্রী হিসেবে পরিচিত। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এলাকায় তিনি প্রতিসপ্তাহে জনসাধারণ ও নেতাকর্মীদের সময় দেন। পাশাপাশি প্রতি শুক্রবারে সংসদীয় আসনের বিভিন্ন মসজিদে নামাজ আদায় করেন, এলাকার মানুষের খোঁজ-খবর নেন। আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ওয়াসিকা আয়েশা খান। তিনি আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতিম-লীর সদস্য আতাউর রহমান খান কায়সারের কন্যা।

এ ব্যাপারে আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে জয়লাভ করানো আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। আনোয়ারায় ইতোমধ্যে আমরা সকল অঙ্গ সংগঠন গুছিয়ে নিয়ে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। আমাদের মন্ত্রী মহোদয় সারা বাংলাদেশে একজন সজ্জন ব্যক্তি। বাবু পরিবারের যোগ্য অনুসারী হিসেবে তিনি তার কাজের দক্ষতার মাধ্যমে এই অঞ্চলের অদ্বিতীয় একজন অভিভাবক। সুতরাং এ আসনে প্রার্থী হিসেবে তার কোনো বিকল্প নেই। আগামী নির্বাচনে আমাদের জয় সুনিশ্চিত।

আওয়ামী লীগের বিপরীতে এই আসনটিতে বিএনপির প্রার্থীর সংখ্যা ৭। দলীয় মনোনয়ন চাইবেন সাবেক সংসদ সদস্য সরোয়ার জামাল নিজাম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, জিয়া উদ্দীন আহমদ চৌধুরী (আশফাক), উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব লায়ন হেলাল, খালেদা জিয়া মুক্তিমঞ্চের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব এডভোকেট লোকমান শাহ্ধসঢ়;, কর্ণফুলী উপজেলা থেকে আলী আব্বাস ও এস এম মামুন মিয়া।

এদিকে চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটি উপজেলায় বিএনপির আন্দোলন সংগ্রাম তীব্র হলেও আনোয়ারায় তেমন লক্ষ্য করা যায়নি। এ ছাড়া বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাভোগ ও চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনে আনোয়ারা-কর্ণফুলীতে বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে সম্ভাব্য প্রার্থীদের অনেককে মাঠে দেখা যায়নি।

সরোয়ার জামাল নিজাম বলেন, মিথ্যা মামলা ও হামলার কারণে দলের নেতা-কর্মীরা ঘরে থাকতে পারছেন না। আমার বিরুদ্ধেই মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। দলের বেশির ভাগ নেতা-কর্মী এলাকা ছাড়া। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচন ও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। তিনি বলেন, দল নির্বাচনে গেলে মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।

বিএনপি নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ওয়ান ইলেভেনের পর থেকে দলের একজন কর্মী হিসেবে কাজ করে আসছি। দলের সব কর্মসূচি নেতাকর্মীদের নিয়ে পালন করেছি। গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের হাইকমান্ড থেকে আমাকে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছিল। কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আবার সরে এসেছি। দলের হাইকমান্ড থেকে বলা হয়েছে আপনি এলাকায় কাজ করুন। সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপি নির্বাচনে যাবে। সে নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৩ আনোয়ারা-কর্ণফুলী সংসদীয় আসনে দলের পক্ষ থেকে আমাকে মনোনয়ন দেবে বলে শতভাগ আশাবাদী।

এদিকে এ আসন থেকে নির্বাচন করতে চান এনডিএম’র মো. এমরান চৌধুরী। বর্তমানে তিনি আনোয়ারা-কর্ণফুলী উপজেলায় প্রচার-প্রচারণা ও নানা কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন।

অপরদিকে জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচন করতে চান আনোয়ারা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবদুর রব চৌধুরী টিপু ও কর্ণফুলী উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক এম বোরহান উদ্দিন ফারুকী। এ ছাড়া বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব এম এ মতিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী ইরফানুল হক, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব ছৈয়দ মুহাম্মদ হামেদ হোসাইন মনোনয়ন পেলে নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন।

 

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট