কাপ্তাইয়ে পাহাড়ের ঢালে সাথী ফসলের পাশাপাশি হলুদ চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। পাহাড়ি অঞ্চলের কৃষকদের কাছে লাভজনক ফসলের নাম হলুদ। এই অঞ্চলের মাটিও হলুদ চাষের জন্য বেশ উপযোগী। বর্তমানে হলুদের চাহিদা ও বাজারদর ভালো হওয়ায় পার্বত্য অঞ্চলের কৃষকদের মাঝে এই মসলাজাতীয় ফসল চাষে আগ্রহ বাড়ছে। ফলে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে হলুদ চাষ। কাপ্তাইয়ে পাহাড়ের ঢালুতে চোখ পড়লেই দেখা মিলবে হলুদের সমারোহ। উপজেলার ওয়াগ্ধসঢ়;গা ইউনিয়ন কুকিমারা পাহাড়ের কোলজুড়ে হলুদের ক্ষেত আর ক্ষেত। সবুজ পাহাড়ের কোল ঘেঁষে এসব হলুদ চাষ নজর কাড়ছে সবার। জানা গেছে, স্থানীয় বেশিরভাগ চাষিই হলুদ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। কৃষক সুবিমল তঞ্চঙ্গ্যা ও বিনয় তনচংগ্যা জানান, হলুদ আবাদ সাধারণত ৯ মাসব্যাপী হয়ে থাকে। বিঘাপ্রতি কাঁচা হলুদ পাওয়া যায় প্রায় ১২০ থেকে ১২৫ মণ। হলুদে তেমন রোগ বালাই নেই বলে কৃষকদের তেমন ঝামেলা পোহাতে হয় না। তবে সার এবং কীটনাশক ব্যবহার করলে এর ফলন ভালো পাওয়া যায়। পাশাপাশি বাজারদর বেশি হওয়ায় হলুদের আবাদে ঝুঁকছেন অনেক কৃষক। কয়েকবছর ধরে হলুদ চাষ করছেন স্থানীয় কৃষক মনিধন তঞ্চঙ্গ্যা। তিনি জানান, এক সময় জুম চাষ করে সংসার চালাতো।
পরে স্থানীয় কৃষকদের সাথে পরামর্শ করে তিনি হলুদ চাষ করেন। জুম চাষের চেয়ে হলুদে বেশ লাভবান হয়েছেন বলে জানান তিনি। কৃষকরা জানান, প্রতিবিঘা জমি হলুদ চাষের জন্য খরচ হয় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। গত বছর প্রকার ভেদে ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত প্রতিমণ হলুদ বাজারে বিক্রি হয়েছে। সেই তুলনায় এ বছর হলুদের বাজারদর আরও বেশি হবে বলে ধারণা করছেন কৃষকরা।
কাপ্তাই উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু সালেহ দৈনিক পূর্বকোণকে জানান, পার্বত্য অঞ্চলে হলুদের কদর অনেক বেশি। বিশেষ করে কাপ্তাইয়ে যে জাতের হলুদের চাষ হয়, এটি অনেকটা ভালো মানের হলুদ। তাই এর বিক্রিও বেশি হয়ে থাকে।
তিনি আরও বলেন, কাপ্তাই উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ১৪টি ব্লকে প্রায় ১৫০ হেক্টর জমিতে হলুদের চাষ হয়ে থাকে। তৎমধ্যে ওয়াগ্ধসঢ়;গা ব্লকে প্রায় ৩০ হেক্টর জমিতে হলুদের চাষ হয়। হলুদ সংরক্ষণ করে রাখা যায় বলে, প্রান্তিক কৃষকেরা হলুদ চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছে। যার ফলে পার্বত্য অঞ্চলে দিন দিন হলুদের চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পূর্বকোণ/পিআর