চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

তৎপর আওয়ামী লীগের ৭ প্রার্থী, মাঠে নেই বিএনপি-জামায়াত

সৌমিত্র চক্রবর্তী, সীতাকুণ্ড 

১৪ অক্টোবর, ২০২৩ | ১১:১৯ পূর্বাহ্ণ

আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সীতাকুণ্ডে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ বেড়েছে। প্রার্থীরা মাঠে থেকে নানাভাবে কাজের মধ্যে দিয়ে কেন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে এখনো পর্যন্ত শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদেরই দেখা যাচ্ছে। এছাড়া বিএনপি-জামায়াত, জাপা বা অন্য কোন দলের প্রার্থীর নাম শোনা গেলেও বাস্তবে কেউ মাঠে নেই।

 

আগামী ডিসেম্বর কিংবা জানুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা মাথায় রেখে সীতাকু-ে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ব্যাপক দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন। তারা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগসহ নানা লবিং চালানোর পাশাপাশি নিজ এলাকাতেও সরকারের পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে ততই নতুন নতুন প্রার্থীর নাম আসছে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায়। কিন্তু যতজনের নাম আছে ততজনকে মাঠে দেখা যাচ্ছে না।

 

এবারের নির্বাচনে সীতাকু- থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী আছেন চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনের সংসদ সদস্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, এই আসন থেকে পরপর দুই বার নির্বাচিত আলহাজ দিদারুল আলম এমপি, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল বাকের ভূঁইয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান, সাবেক সাংসদ এ বি এম আবুল কাশেম মাস্টারের পুত্র আলহাজ এস.এম আল মামুন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি এডভোকেট ফকরুদ্দিন চৌধুরী, শিল্পপতি লায়ন মোহাম্মদ ইমরান এবং চসিকের কাউন্সিলর মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য প্রফেসর ড. নিচার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু। তারা মাঠে প্রচারণার মাধ্যমে নিজেদের প্রার্থিতা জানান দিয়েছেন। এছাড়া এই দল থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে প্যাসিফিক জিন্সের কর্ণধার মরহুম শিল্পপতি মো. নাসির উদ্দিনের জৈষ্ঠ পুত্র সৈয়দ তানভীরেরও। তবে তিনি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে মুখ খোলেননি।

 

অন্যদিকে এই আসনে বিএনপিসহ অন্যান্য দলের কোন প্রার্থীকে এখনো মাঠে দেখা যাচ্ছে না। তবে ইতোমধ্যে কয়েকজন প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। এরা হলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব কারাবন্দী নেতা লায়ন আসলাম চৌধুরী এফসিএ ও উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি এ কে এম আবু তাহের বিএসসি। জামায়াতের আমীর আনোয়ার হোসেন ছিদ্দিকী দলটির একক প্রার্থী হবেন বলে দলীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে। এছাড়া আর কোন প্রার্থী এখনো প্রচারে কিংবা আলোচনায় নেই।

 

নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে কেবলমাত্র আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মাঠে দৌড়ঝাঁপ করতে দেখা যাচ্ছে। তারা বিভিন্ন সভা-সমাবেশে সরকারের উন্নয়নের কর্মকা-গুলো তুলে ধরে আগামী নির্বাচনেও নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে জয়ী করার জন্য সাধারণ মানুষের মাঝে প্রচারণা চালাচ্ছেন। একইভাবে নিজেদের নাম-ছবিসহ প্রচারপত্রের মাধ্যমে নিজের অবস্থানও জানান দিচ্ছেন। কিন্তু বিএনপি, জামায়াত কিংবা জাতীয় পার্টির কোন প্রার্থীকে প্রচারণায় দেখা যায়নি। কিংবা সাংবাদিকদের কাছেও কোন প্রত্যাশার কথা জানাননি তারা। ফলে মাঠে শুধু একদলীয় (আ. লীগ) প্রচারণা চোখে পড়ছে। এসব প্রচারণার মধ্যে এমপি দিদারুল আলম নিজে প্রতিদিন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে আ. লীগের উন্নয়নের প্রচারণা চালিয়ে এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আবারো আ. লীগকে ক্ষমতায় আনতে নৌকায় ভোট দিতে অনুরোধ জানাচ্ছেন। পাশাপাশি তার সমর্থকরা এই সরকারের উন্নয়নের লিফলেটসহ নানাভাবে প্রচারণায় নেমেছে গ্রাম ও হাটবাজারে। অনেকটা একই পদ্ধতিতে প্রচারণা চালাচ্ছেন মনোনয়ন প্রত্যাশী উপজেলা চেয়ারম্যান এস.এম আল মামুন এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল বাকের ভূঁইয়াও। এছাড়া অন্য প্রার্থীরা নিজ নিজ আঙ্গিকে মাঠে কাজ করছেন। কিন্তু ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে প্যাসিফিক গ্রুপের কর্ণধার সৈয়দ তানভীরের মনোনয়ন প্রত্যাশা নিয়ে। অবশ্য অল্প সময়ে এ বিষয়ে তিনি মিডিয়ার সামনে আসতে পারেন বলে তার একটি ঘনিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। নির্বাচনের বিষয়ে সীতাকু-ের এমপি দিদারুল আলম বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে দুই বার দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। আমি নেত্রীর আস্থা ও বিশ্বাস নিয়ে কাজ করেছি এলাকার উন্নয়নে। এবারও মনোনয়ন চাইব। মনোনয়নের সিদ্ধান্ত নেত্রীর। তিনি যাকে দেবেন তার জন্যই কাজ করব। একই কথা বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ এস এম আল মামুন। তিনি বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে সর্বোচ্চ উন্নয়ন করেছি। এমপি প্রার্থী হিসেবে আগেও মনোনয়ন চেয়েছি এবারও চাই। তবে দলীয় সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল্লা আল বাকের ভূঁইয়া বলেছেন, আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের কর্মী আমি। দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করে দলের জন্য কাজ করেছি। উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবেও সীতাকু-ের উন্নয়নে কাজ করেছি বিগত দিনে। এবার আমার প্রিয় নেত্রীর কাছে মনোনয়ন চাইব। আশা করি তিনি আমার প্রতি আস্থা রাখবেন।

 

এদিকে উপজেলা বিএনপি থেকে অনেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. কমল কদর জানান, সীতাকুণ্ডে বিএনপির একক প্রার্থী লায়ন মো. আসলাম চৌধুরী। অন্য কেউ এখানে প্রার্থী হবার কথা আমাদের জানা নেই।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন