একসময় মাঠে না গিয়েও কাজ করেছেন বলে ফাঁকি দিতেন সীতাকু-ের পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের অনেক কর্মী। কিন্তু আসলেই সে কর্মী ঐদিন মাঠে কাজ করেছেন কিনা তা যাচাই করার কোন উপায় ছিল না। এতে আশানুরুপ কাজও হতো না মাঠপর্যায়ে। তবে নতুন একটি পদ্ধতি বদলে দিয়েছে সে চিত্র। কর্মীরা কখন কী কাজ করছেন, কোথায় করছেন তা ছবিসহ পাঠিয়ে দিতে হচ্ছে। ফলে ফাঁকি দেওয়ার সে সুযোগ আর নেই। এতে বেড়েছে সেবা।
চমৎকার এ পদ্ধতি দেশে প্রথমবারের মতো প্রয়োগ করে মাঠকর্মীদের শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে এসেছেন উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জিয়াউল কাদের। যা কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়সূত্রে জানা গেছে, সীতাকু-ের ১০টি ইউনিয়নে ৮টি ইউনিয়ন পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র ও দুটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৮১ জন কর্মী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। এতজন কর্মী যথাযথভাবে কাজ করছেন কিনা তা অফিসে বসে মনিটরিং করা কষ্টকর। এ কারণে গত বছরের ১ নভেম্বর থেকে প্রথমবারের মতো একটি জিপিএস ক্যামেরার অ্যাপ ব্যবহার করে হাজিরা কার্যক্রম শুরু করেন জিয়াউল কাদের। এ পদ্ধতিসহ কাজের জন্য এ বছর শুদ্ধাচার পুরস্কারে ভূষিত হন জিয়াউল কাদের।
সরেজমিনে পদ্ধতিটির প্রয়োগ দেখতে উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের সুলতানা মন্দির এলাকার কৃষ্ণ দাসের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক অভি দত্ত ও পরিবারকল্যাণ সহকারী রুমা দেবনাথ গৃহকর্ত্রী সদ্য মা হওয়া রমা বনিককে পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক বিভিন্ন পরামর্শ ও সেবা দেন। শেষে একটি ছবি তুলে দম্পতির নাম ও মোবাইল নম্বরসহ পাঠিয়ে দেন একটি গ্রুপে। ওই গ্রুপে তা পর্যবেক্ষণ করে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়। পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জিয়াউল কাদের বলেন, অফিসে বসে মাঠকর্মীদের কাজ শতভাগ পর্যবেক্ষণ করার এ পদ্ধতিকে আমরা স্মার্ট মনিটরিং নাম দিয়েছি। তিনি বলেন, গুগল প্লে স্টোরে অ্যাপটি আগেও ছিল। কিন্তু এটি থেকে কর্মীদের মনিটরিংয়ের চিন্তা কেউ করেননি।
জানতে চাইলে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপপরিচালক আবুল কালাম বলেন, বিভিন্ন কারণে অ্যাপটি আমি আগেও ব্যবহার করেছি। তবে জিয়াউল কাদের তার মাঠপর্যায়ের কর্মীদের হাজিরা ও কাজ পর্যবেক্ষণে এটি ব্যবহার করে চমকে দিয়েছেন। এটি সারাদেশে অনুকরণীয় একটি পদ্ধতি হতে পারে। এ পদ্ধতিতে জেলার সবগুলো উপজেলায় কাজ শুরু করব আমরা। ইতিমধ্যে একাধিক উপজেলায় কাজ শুরুও করেছি।
পূর্বকোণ/পিআর