চট্টগ্রাম সোমবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

ভাগ্য পরিবর্তনে ওমান যান রাউজানের কাউছার, গাড়িচাপায় সব শেষ

রাউজান সংবাদদাতা

৩ অক্টোবর, ২০২৩ | ১০:৫০ অপরাহ্ণ

শয্যাশয়ী অসুস্থ মা। বিবাহ উপযুক্ত ২ বোন আর অসুস্থ বাবাসহ সদ্য বিবাহিত স্ত্রী রেখে সবার ভাগ্য পরিবর্তনে ১৪ মাস আগে ওমানে পাড়ি জমান রাউজানের যুবক মো. কাউছার (২৬) । কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, তার সেই বুক ভরা আশা এখন পরিণত হয়েছে পুরো পরিবারের হতাশা আর তীব্র যন্ত্রণায়। স্বজন হারানোর আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠেছে রাউজান সদর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জরিফ আলী চৌধুরী বাড়ি এলাকার বাতাস।

 

গত শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে নিজ কর্মস্থলে একটি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় কাউসারের।

 

কর্মস্থল ওমানের কিছু প্রবাসী সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকালে ওমানের রুই-সানাইয়া এলাকার গ্যারেজে কাজ করার সময় গাড়িতে চাপা পড়েন কাউছার। এতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেদিনই মৃত্যু হয় তার। কাউসারের মৃত্যুর সংবাদ এলাকায় পৌঁছালে শোকে কাতর হয়ে পড়ে পরিবার পরিজন ও প্রতিবেশীরা। অর্থনৈতিকভাবে একেবারেই অসচ্ছল পরিবারে কাউসারই ছিল উপার্জনের একমাত্র ব্যক্তি। তাকে হারিয়ে আজ দিশেহারা পুরো পরিবার।

 

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) বিকেলে সরেজমিনে পরির্দশনে গিয়ে দেখা যায়, বিছানায় শুয়ে সন্তানের লাশের অপেক্ষায় প্রহর গুণছেন মা। স্তব্দ হয়ে আছেন বাবা। বোন, ফুফু, স্ত্রী আর দাদীর আহাজারিতে ভারী হয়ে আছে পরিবেশ।

 

নিহত কাউসার উপজেলার রাউজান সদর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জরিফ আলী চৌধুরী বাড়ির নুরুল আলম ও হোসনে আরার একমাত্র ছেলে সন্তান।

 

নিহতের বাবা নুরুল আলম জানান, গত ২ বছর আগে সে সর্বপ্রথম ওমানে যায়। তখনও একটি দুর্ঘটনায় আহত হয় সে। পায়ের অসুস্থতা নিয়ে দেশে ফিরে আসে যাওয়ার দেড়মাসের মাথায়। দেশে এসে উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের জিয়াউদ্দিন বাবলুর বাড়ি এলকার আঁখি আকতারের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সর্বশেষ ১৪ মাস আগে তিনি আবারো ওমানে পাড়ি জমান। তার সংসারে কোন সন্তান নেই। ৩ বোন ১ ভাইয়ের মধ্যে কাউসার ৩য়। প্রবাসে যাওয়ার আগে দেশে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালাতো সে।

 

স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুল নবী বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। লাশ দেশে আনার চেষ্টা চলছে। পরিবারটি খুবই অসহায়। তার লাশটি দেশে আনতে রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ও তরুণ সমাজসেবক ফারাজ করিম চৌধুরীসহ প্রবাসীদের সহযোগিতা কামনা করেছেন পরিবারের সদস্যরা।

 

পূর্বকোণ/জাহেদ/জেইউ/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট