চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে জাহাজ ভাঙা শিল্প পরিদর্শন করে মুগ্ধ হয়েছেন নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিকটার ভেন্ডসেন। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে তিনি এখানে ৪টি গ্রিন শিপব্রেকিং ইয়ার্ড পরিদর্শন করে জাহাজ ভাঙা শিল্পের অভূতপূর্ব উন্নয়ন দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
এদিন দুপুরে উপজেলার কুমিরায় অবস্থিত কে.আর স্টিল শিপব্রেকিং ইয়ার্ড পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের শিপব্রেকিং শিল্প বিশ্বে শীর্ষ স্থানে অবস্থান করছে। এই শীর্ষ স্থান ধরে রাখতে হলে হংকং কনভেনশন মেনে ইয়ার্ডগুলোকে উন্নতির পথে নিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে সে কাজেও অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এখানে চারটি শিপইয়ার্ড ইতোমধ্যেই গ্রিন ইয়ার্ডের সনদ পেয়েছে। আরো বেশ কিছু ইয়ার্ড উন্নয়ন প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। শিগগিরই তারাও হয়ত এ সনদ পাবে।
২০২৫ সালের মধ্যেই সব ইয়ার্ড গ্রিন শিপইয়ার্ড হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, এই যে ইয়ার্ডটি আমি পরিদর্শন করছি (কে.আর স্টিল শিপব্রেকিং) এটির পরিবেশও অত্যন্ত সুন্দর। এমন ইয়ার্ড হলে আর কোন প্রশ্ন থাকে না।
প্রসঙ্গ টেনে নরওয়ের রাষ্ট্রদূত বলেন, নরওয়ের পতাকাবাহী জাহাজ কাটতে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। গ্রিন শিপইয়ার্ড হলে ইয়ার্ড পরিপূর্ণ হয়। এখানে (সীতাকুণ্ডে) যেভাবে জাহাজ ভাঙা শিল্প উন্নতি করছে তাতে আশা করছি ২০২৫ সালের পর নরওয়ের জাহাজও এখানে অনায়াসে কাটা হবে।
রাষ্ট্রদূতের সাথে থাকা কে.আর স্টিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. তসলিম উদ্দিন বলেন, একটি শিপইয়ার্ডকে গ্রিন শিপইয়ার্ডে পরিণত করতে ৩০-৫০ কোটি টাকা খরচ হয়। এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় গ্রিন শিপইয়ার্ড করা কঠিন হয়ে পড়ে। সরকার যদি এই শিল্পে সহজ শর্তে ঋণ দেয় তবেই শিল্পটি ঘুরে দাড়াতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, এর মধ্যে জাহাজ ভাঙা শিল্পকে লাল তালিকাভুক্ত করায় সমস্যা আরো বেড়েছে। এটিকে পুনরায় কমলা শ্রেণিভুক্ত করার অনুরোধ জানান তিনি। রাষ্ট্রদূত এদিন জিরি সুবেদার, ম্যাক কর্পোরেশন, আরব শিপব্রেকিং, কে.আর স্টিল শিপইয়ার্ড, যমুনা শিপইয়ার্ড, তাহের অ্যান্ড কোং লিমিটেড, এইচ.এম শিপিং লাইনস লিমিটেড, পিএইচপি শিপব্রেকিং ইয়ার্ড পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন শিপব্রেকার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আবু তাহের, সহ-সভাপতি জহিরুল ইসলাম রিংকু, কার্যকরী কমিটির সদস্য মাস্টার মো. আবুল কাশেম প্রমুখ।
পূর্বকোণ/সৌমিত্র/জেইউ/পারভেজ