চট্টগ্রাম রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

ফের আতঙ্কে সাতকানিয়াবাসী

ডলু নদীর ভাঙা বাঁধ ঠিক না করায় পানি ঢুকছে লোকালয়ে

সৈয়দ মাহফুজ-উন নবী খোকন ও ইকবাল মুন্না

২৮ আগস্ট, ২০২৩ | ১২:৩২ অপরাহ্ণ

গত ৭ আগস্ট সোমবার রাত ৮টায় সাতকানিয়ায় বন্যায় পৌরসভার ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যবর্তী কালু মেম্বারের বাড়ি এলাকায় ডলু নদীর পানি বিপদসীমা পেরিয়ে তীররক্ষা বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় সাতকানিয়া পৌরসভা, সদর, ঢেমশা, কেঁওচিয়া, পশ্চিশ ঢেমশা, ছদাহা ইউনিয়ন। এসময় এসব এলাকায় লক্ষলক্ষ মানুষ পানিবন্দী হয়। ভেঙে যায় কাঁচা, পাকাঘর, হারিয়েছে নিজের শেষ সম্বলটুকু। পরে দৈনিক পূর্বকোণে সংবাদ প্রচারের পর ওই স্থানে সংস্কারের উদ্যোগ নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু পৌরসভা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আরাফাত উল্লাহ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. রাসেল উদ্দিনের অসহযোগিতা এবং মাটি কাটতে স্থানীয়দের বাঁধায় আর সংস্কার কাজ হয়নি।

 

তাই ভারী বর্ষণের ফলে আবারো একই স্থান দিয়ে পানি ঢুকে প্লাবিত হচ্ছে লোকালয়। রবিবার বিকেলে উপজেলার পৌরসদরের ভোয়ালিয়া পাড়ার ডলু নদীর ভাঙন দিয়ে পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। প্লাবিত হয়েছে কাঞ্চনা, ছদাহা, বাজালিয়াসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল। ফলে উপজেলার কেঁওচিয়া, চরতী, নলুয়া, বাজালিয়া, কালিয়াইশ, ধর্মপুর, ছদাহাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের বাসিন্দারা আতঙ্কিত। কেননা বাড়িঘর থেকে পানি নেমে গেলেও খালবিলে পানিতে থৈ থৈ করছে। এরমধ্যে নতুন করে বন্যা হলে আবার পানিতে ভাসতে হবে।

 

সাতকানিয়া পৌর সদরের বাসিন্দা যুবলীগ নেতা কাইছার হামিদ অভি বলেন, ভোয়ালিয়া পাড়ায় ডলু নদীর ভাঙা অংশ নিয়ে পানি প্রবেশ করছে। রাস্তাঘাট ডুবে গেছে।

 

জনপ্রতিনিধি ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাদের প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে মোহাম্মদ নাঈম উদ্দিন বলেন, বন্যা পরবর্তী এতদিন সময় পাওয়ার পরও প্রতিরোধমূলক কোন ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্টরা। দুঃসময়ে তড়িৎ সাহায্য করতে সবাই ব্যর্থ। সবার অবহেলায় আজ আবারও অনায়াসে পানি ঢুকছে।

 

৭ নম্বর ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর আফরোজা আক্তার শারমিন বলেন, ডলু নদীর ভাঙা বাঁধ সংস্কার না করলে আমরা আবার পানি তলায় থাকবো।

 

পানি উন্নয়ন বোর্ড পটিয়া উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী অপু দেব বলেন, ডলুনদীর কালু মেম্বার ঘাটা এলাকায় ভাঙা অংশ সংস্কারে আমরা কাজ শুরু করলে মাটি দিতে অস্বীকৃতি জানায় স্থানীয়রা, একবার এদিকে, অন্যবার ওদিকে এইভাবে কাজে বিঘ্ন ঘটে। পরে বিষয়টি ইউএনও এবং পৌর মেয়রকে জানিয়েছি। সাতদিন ধরে ঠিকাদার কাজ করতে পারছে না।

 

৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. রাসেল উদ্দিন বলেন, আমার ওয়ার্ড বন্যা প্লাবিত হওয়ায় কোথাও শুকনো মাটি নেই। যদি মাটি না থাকে, তাহলে মাটি দিব কিভাবে! আমি বলেছি বাহিরে কোন স্থান থেকে মাটি এনে কাজ শুরু করতে।

 

সাতকানিয়া পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, আমরা সমন্বয় করে কাজ শুরু করেছিলাম। মূলত ভাঙনটি সংস্কারে ৫ হাজার গাড়ি মাটি দরকার আর এই মুহূর্তে কোথাও মাটি নেই। শুকনো মৌসুমে নদীর পাড় সংস্কার শুরু করলে ভাল হবে।

 

সাতকানিয়ার ইউএনও মিল্টন বিশ্বাস বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাকে ভাঙ্গন স্থানটি আবার পরিদর্শন করে পৌর মেয়রকে জানাতে বলেছি। ডলু নদীর একপাশ সংস্কার করতে গিয়ে যদি অন্যপাশ থেকে মাটি নেয়, তাহলে সেই অংশতেও ভাঙ্গন হতে পারে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙা বাঁধ দ্রুত সারিয়ে তুলবেন।

পূর্বকোণ/আরডি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট